পাতা:দিল্লী চলো - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

আমাদের অগ্রসরমান সৈন্যদের সঙ্গে গিয়ে মুক্তিপ্রাপ্ত অঞ্চলের শাসন ও পুনর্গঠনের কার্য্যভার গ্রহণ। আজাদ-হিন্দ দল নামক এই প্রতিষ্ঠানটি প্রধানত বেসামরিক হলেও একে সামরিক ভিত্তিতে এমন ভাবে গড়ে তোলা হয়েছে—যাতে এই প্রতিষ্ঠান যুদ্ধকালীন অবস্থায় কাজ করতে পারে এবং রণক্ষেত্রের সৈন্যদেরই ন্যায় অসুবিধা ও বিপদের সম্মুখীন হতে পারে। যে ভাবে বেসামরিক নরনারীরা দলে দলে এসে আজাদ-হিন্দ দলে যোগ দিয়েছে তাতে তাদের বিশেষভাবে প্রশংসা করতে হয়। এদের অনেকেই পূর্ব্বে কোন প্রকারের সামরিক শিক্ষা পায় নি। এর থেকে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, পূর্ব্ব-এশিয়ার সমগ্র ভারতীয় সমাজের চিত্তে আত্মত্যাগের বহ্নি জ্বলছে এবং তারা স্বাধীনতা লাভের জন্যে সব কিছু করতে প্রস্তুত। “করব অথবা মরব” এই মনোবৃত্তি শুধু আজাদ-হিন্দ ফৌজকেই অনুপ্রাণিত করছে না—বে-সামরিক ভারতীয়দের মনে মনেও আজ এই একই প্রেরণা। রণাঙ্গনের সৈন্যদের মত গৃহাঙ্গনের কর্ম্মীদের মনোবলও আজ অভূত ও অপূর্ব্ব।

 আমাদের গত এক বৎসরের কাজ নিম্নোক্ত রূপে সংক্ষেপে বর্ণনা করা চলে:—

 ১। আমরা “সামগ্রিক সমর-প্রস্তুতির” কর্ম্মতালিকা অনুসারে লোক, অর্থ এবং দ্রব্যাদি সংগ্রহ করতে পেরেছি।

 ২। আমাদের বাহিনীকে আমরা আধুনিক যুদ্ধের উপযোগী করে শিক্ষিত করেছি এবং তার যথোচিত বিস্তৃতি-সাধন করেছি।

 ৩। সেনাবাহিনীতে আমরা “ঝাঁসীর রাণী বাহিনী” নামে একটি নারী-বিভাগ গড়ে তুলেছি।

 ৪। আমরা আজাদ-হিন্দ সামরিক গবর্নমেণ্ট নামে নিজেদের গবর্নমেণ্ট গঠন করেছি এবং মিত্রশক্তিদের কাছ থেকে তার স্বীকৃতি পেয়েছি।

৩২