পাতা:দুনিয়ার দেনা - হেমলতা দেবী.pdf/১০০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৯৪
দুনিয়ার দেনা

 কিছুদিন থেকে কালামাঝি পারাণীর পয়সটি সুরীর কাছে নেয় না। সুরী বলে কেন মাঝি পয়সা নেবে না, পয়সা না হলে তোমার চলবে কিসে? মাঝি বলে “রোজ আমি কত পয়সা পাই একটা পয়সাতে আমার কি আসে যায়? তোমার কাছে পয়সা নিতে আমার একটুও ভাল লাগে না। পয়সাটি নিয়ে তুমি যা খুসী কোরো, যাকে খুসী দিও, বাবাকে ফিরিয়ে দিতে হবে না।

 সুরী বলে কি মজা, একটা করে পয়সা আমার নিজের, এটা নিয়ে আমি যা খুসী করবো।

 সাতদিনের পয়সা জড় হলে কোনোবার সে পুতুলের বিয়েতে খরচ করে, কোনোবার চারটে পয়সা জমলেই সঙ্গিনীদের মুড়ি বেগুণী কিনে খাওয়ায়, কোনোবার ছোট ভাইটির জন্যে ওপার থেকে কাগজের ফানুষ, রঙ করা টিনের বাঁশি কিনে আনে, কখনো বা দু একটা পয়সা কানা খোঁড়াকে দেয়।

 কালামাঝির দেওয়া পয়সাটির উপর সুরীর বড় দরদ। রোজ রাতে ঘুমবার আগে সুরী ভেবে রাখে পরদিনের পয়সাটি সে কিসে খরচ করবে। সুরীর পয়সা পাওয়ার খবর শুনে চিন্তে মালি বল্ল, “সুরী, তুই মাঝিকে রোজ একটা করে ফুল দিস, শুধুই পয়সা নিবি তার বদলে মাঝিকে তুই কিছু দিবিনে, খুসীতে সুরীর মুখখানা যেন ঝলমলিয়ে উঠল, সে তাড়াতাড়ি বল্‌ল ঠিক বলেছ বাবা