পাতা:দুনিয়ার দেনা - হেমলতা দেবী.pdf/১০৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সাঁঝের পাড়ি
১০৩

 আকাশে অল্প অল্প মেঘ করেছে, নদীর বুকে বাতাস উঠে খেয়াখানাকে অল্প অল্প দোলাচ্ছে, কালামাঝি হাল ধরে বসে, খেয়ার বুকে বাউল আর সুরী; এখনো পাড়ি দেওয়ার সময় হয়নি,—একঘণ্টা দেরী আছে। বাউল ধীরে ২ একতারাতে ঘা দিচ্ছে আর নিজের মনে গুন্ গুন্ করে গাইছে—

আমার এই একটি তারের
একটি কড়ি দর।

 দূর থেকে দেখা গেল তাড়াতাড়ি পা ফেলে একটি লোক যেন খেয়া ঘাটের দিকে এগিয়ে আসছে। একটু পরেই সে এসে উপস্থিত হল, পা দুটো ধূলোয় ভরা, মাথার চুল উস্‌কো খুসকো, মুখখানা শুকিয়ে গেছে, চোখের দৃষ্টি যেন কাকে খুঁজছে; লাল কাপড়ের তৈরী একটা খোলের মধ্যে একটা লম্বা ধরণের জিনিষ ভরা—জিনিষটা বাদ্যযন্ত্র বলে বোধ হয়—সেইটা হাতে নিয়ে লোকটি তীরে দাঁড়িয়ে জিজ্ঞাসা করল “এদিকে বাউল এসেছেন?”

 খেয়ার উপর থেকে বাউল বল্ল, কেন ভাই বাউলকে তোমার কি দরকার?

 লো। বড় দরকার, তাঁর একতারার সুরটা আমাকে