পাতা:দুনিয়ার দেনা - হেমলতা দেবী.pdf/১১২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০৬
দুনিয়ার দেনা

রাত বাজছে; বিরাম নেই, বিশ্রাম নেই, শ্রান্তি নেই, ক্লান্তি নেই সে বাজছেই বাজছেই বাজছেই। সে ডাক হৃদর হরা বৈরাগ্য ভরা সুর, সে চিরফাঁকের সুর।”

 বী। সে সুর ধরে রাখছে কে?

 বা। বাউলের একতারা, সেই সুরই বাউলের একতারাতে বাজে, উদাসীর প্রাণকে আরও উদাস করে, আপনি বেজে জগতের সব সুরকে নিজের নিজের জায়গায় বাজবার চির অবকাশ দেয়। এই ফাঁকের সুরটা বাজাতে না জানলেই সুরে সুরে জড়িয়ে যায় হে বীণকর তারে তারে জড়িয়ে যায়। ফকির তোমাকে এই ফাঁকের সুরটাই শিখতে বলেছে।’


 বাউলের কথাশুনে বীণকর আনন্দে বলে উঠল, “বাজাও, ভাই বাউল বাজাও, তোমার ‘একতার’ আমার জড়ান বীণার তারে একবার ফাঁকের সুরটা লাগিয়ে নিই।” এই বলে থলের ভিতর থেকে সে নিজের বীণাটা বের করতে লাগল।

 এদিকে যাত্রী বোঝাই হয়ে কালা মাঝি খেয়া ছেড়ে দিয়েছে। সুরী এতক্ষণ হাঁ করে বাউলের কথা শুনছিল, খেয়া ছাড়তেই বলে উঠল “এইবার গাও না বাউল।” বাউল গান আগেই ধরেছে—

আমার এই একটি তারের
একটি কড়ি দর,