পাতা:দুনিয়ার দেনা - হেমলতা দেবী.pdf/১১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সাঁঝের পাড়ি
১০৭

 একতারা বাজছে, বাউল গাইছে—

‘দুনিয়ার সকল সুরের
এই সুরেতে ভর।’

যাত্রীরা বাউলের কথা, বাউলের গান, একতারার ঝঙ্কার মন্ত্রমুগ্ধের মত বসে শুনছে, বাউল গাইছে—

বাজে সে একটি ফাঁকে,
সাড়া দেয় একটি ডাকে,
বাঁধে সে সকল সুরের
মাঝখানে তার ঘর।’

 আকাশে মেঘ জমে উঠেছে, সেদিকে কারো নজর নেই, সকলের মন সুরের দিকে; বীণকর একটি আঙ্গুল দিয়ে জড়ান তারের উপরই কিড়িং কিড়িং করে ঘা দিচ্ছে,—ফাঁকের সুরটা লেগে, পাক খুলে, যদিই বীণা বেজে ওঠে।

 হঠাৎ কালা মাঝি বলে উঠল “আজ আকাশের গতিক খারাপ, ঝড় উঠবে হে।” কেউ সে কথায় কান দিল না, একতারার ঝঙ্কারে সকলের মন ডুবে আছে।

 তারে ঘা দিতে দিতে বীণকর হঠাৎ চেঁচিয়ে উঠল “পাক খুলেছে হে বাউল আমার জড়ান তারের একটা পাক খুলেছে।”

 বা। “তা তো খুলবেই; ফাঁকের সুরটা লাগাতে পারলেই পাক্‌ খুলবে; ফাঁকটা বজায় রেখে সুর