বলল” মাঝি, সবাই বল্ছে কালামাঝির খেয়ায় কোন ভয় নেই, তোমাকে ওরা জানে।”
মা। “তোমার চেয়ে বেশী জানে না।”
সু। “আমি বুঝি তোমাকে খুব বেশী জানি?”
মা। “হাঁ, খুব বেশী, সব চেয়ে বেশী; তুমি আমার সব জান।
সু। বলত কি কি জানি আমি গুণে গুণে দেখি।
এই বলে সুরী আঙ্গুলে এক, দুই, গুণতে লাগল, মাঝি বলে যাচ্ছে— কোথায় থাকি, কোথায় শুই, কি খাই, কখন খাই, কখন শুই, ঘর কোথা, আছে কে, রাঁধে কে, খুকীর খবর, খুকীর মায়ের খবর, তাদের আকাশে থাকার খবর, সব খবরই তুমি জান, এত কি আর কেউ জানে?
সু। “সত্যি মাঝি, আমি তোমার সব জানি, আমার মত কেউ জানে না; তোমার কাছে থাকতে তাই আমি এত ভাল বাসি মাঝি!
“ভালবাস বলেই আমার সবটা নিয়ে আমাকে এমনতর ফাঁকা করে দিয়েছ। আমার ফাঁকা বুকটাতে এখন নদীর জল ‘ছলাৎ’ ‘ছলাৎ’ করে এসে ঢোকে, খেয়াখানা আসতে যেতে আমার বুকের মধ্যে কেমন গান গায়!”
সু। কি বল মাঝি, খেয়া আবার কখনো গান গাইতে পারে?