পাতা:দুনিয়ার দেনা - হেমলতা দেবী.pdf/১২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১১৪
দুনিয়ার দেনা

সাপ নিয়ে একজন বেদে খেয়ায় পার হচ্ছিল, ডালা ঠেলে, মাথা উঁচিয়ে দুবার দুটো সাপ চুবড়ির ভিতর থেকে লাফিয়ে জলে পড়ল এ তারই শব্দ।

 রাগে গস্‌গস্ করতে করতে চুবড়ি ধরে বেদে ঝাঁকাচ্ছে আর বক্‌ছে, “আঃ গেল যা, সাপ গুলোর হয়েছে কি, ভারি যে জ্যান্ত হয়ে উঠেছে দেখছি, দু দুটে সাপ পালিয়ে গেল, আবার আমাকে কষ্ট করে জঙ্গল থেকে সাপ ধরে পোষ মানাতে হবে; এদের কত করে শিখিয়েছিলুম।”

 চুবড়িতে সাপ চারটে ছিল, দুটো পালিয়েছে বাকি দুটোও স্থির থাকছে না, ঝেঁকে ঝেঁকে উঠছে।

 বেদের হাতে একটা বাঁশি ছিল, তাই দিয়ে সাপ দুটোর মাথায় ঘা দিতে দিতে সে বল্‌ল চুপ, থাক বেটা চুপ্ থাক্‌, নড়বিনে চুপ্ থাক্‌।

 ঘা খেয়ে তখনকার মত সাপ দুটো গুটি সুটি মেয়ে চুবড়ির মধ্যে লুকোলো, সাপুড়ে বাঁশীতে ফুঁদিল।

 সাপুড়ের বাঁশির সুরে সাপ মুগ্ধ হয়ে বশ মানে; বাঁশী পোঁ ধরল, বেদে নিশ্চিন্ত হয়ে বাঁশী বাজাতে লাগল আর সাপদের পালাবার যো নেই সে জানে।

 বাউলের একতারা বাজছে, গান চলছে তার ভিতরে সাপুড়ের বাঁশীর পোঁ পোঁ আওয়াজটা সকলেরই কানে