পাতা:দুনিয়ার দেনা - হেমলতা দেবী.pdf/১২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সাঁঝের পাড়ি
১১৫

কেমন বেখাপ ঠেকতে লাগল। বাউল সে দিকে কান দেয়নি, সে নিজের মনে গেয়েই যাচ্ছে—

ওরে ও ক্ষ্যাপা বাউল
মিছে তুই মরিস্ ঘুরে,
‘তারে’ তোর বাজছে যে সুর
সেই সুরে নে পরাণ পুরে,
আছে পথ একটি জানা
গেছে সুর একটি শোনা,
দেখে নে জগৎ খানা
বাজছে কোথায় একের সুরে।

 সাপুড়ের বাঁশীর পোঁ পোঁ সুর তখনো রাজছে, সকলে ত্যক্ত হয়ে উঠল। যাত্রীদের মধ্যে একজন বলে উঠল “কি হে বেদে তোমার পোঁ পোঁ থামবে না; দেখছ না একতারা বাজছে।”

 বেদে চটে উঠে বল্‌ল “বলেন কি মশায় দু দুটো সাপ পালিয়ে গেল আমার কি কম ক্ষতি হল, ঐ একতারার সুরটাই তো সাপগুলোকে বিগড়িয়ে দিচ্ছে। সাপেরা অন্য সুর সইতে পারে না। বাঁশীর সুর শুনে তবে একটু চুপ করে আছে”।

 কথা কইতে গিয়ে বেদে অন্যমনস্ক হয়েছে সেই তাবসরে ঝপাৎ করে আর একটা সাপ্ লাফিয়ে জলের মধ্যে পড়ল।