পাতা:দুনিয়ার দেনা - হেমলতা দেবী.pdf/১৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দুনিয়ার দেনা
১২৯

উন্নতি নিয়েই তিনি পড়ে আছেন। একখানি চিকিৎসার ও একখানি আইনের ছোট বই ছাপিয়ে গাঁয়ের ছেলে মেয়েদের স্কুলে পড়ানর ব্যবস্থা করেছেন যাতে এ বিষয়ে তারা অজ্ঞ না থাকে। নিজে সম্পূর্ণ একেলে হয়ে ও সেকালটিকে পুরন্দর ষোল আনা নিজের মধ্যে বজায় রেখেছেন। বেশভূষা চাল চলন দেখে তিনি সহুরে কি পাড়াগেঁয়ে বোঝা দায়। চার পুরুষ তাঁদের সহরে বাস গেঁয়ো আনাড়ী ভাব তাঁরা অনেক দিন ছাড়িয়ে গেছেন আবার সৌখিন সহুরে চাল চলনও ঢের মন্থন করে এসেছেন কোন দিকে তাঁর কমতি নেই; এখন তিনি এ দুয়ের উপর। গাঁয়ের লোক তাঁকে বাবা ঠাকুর বলে ডাকে।

 ঝকঝকে তকতকে মেজেটা পাকা করে বাঁধানো, খোড়ো চালের একখানা বড় গোছের মাটির বাড়ীর সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে, দরজার বাইরে থেকে, পুরন্দর চক্রবর্ত্তী হাঁকলেন, কেবলরাম!

 সাড়া পেয়ে আধাবয়সী চাষী কেবলরাম হরিণ চামড়ার একখানা আসন হাতে করে, ব্যস্ত হয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে এল। কেবলরামের বয়স চল্লিশ বেয়াল্লিশ হবে, বেশ সুশ্রী সুন্দর চেহারা। রঙ উজ্জ্বল শ্যামবর্ণ, লম্বা, দোহারা গড়ন চাল চলন অত্যন্ত ভদ্র, নম্র ও শিষ্টাচার যুক্ত। একে দেখ্‌লে আর বলবার যো নেই যে, “গেঁয়ো চাষা ভুত।” বাড়ীতে তার গাইগরু দশটা,