পাতা:দুনিয়ার দেনা - হেমলতা দেবী.pdf/২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ফকিরের ফাঁক
১৫

 চোর দুজন লজ্জায় মাথা হেঁট করে বেরিয়ে গেল এক টুকরা ছেঁড়া ন্যাকড়াও সঙ্গে নিয়ে গেল না।

 এইভাবে দেবদূতের দিন কাটে। কোনদিন তাঁর কোন কাজের একচুল ব্যতিক্রম হয় না। সেই সারাদিন পরিশ্রম, সন্ধ্যায় নৌকা চড়া, ফিরে এসে ফুলটি ভাসান ও শেষে স্বপাক অন্ন খেয়ে রাতে নিদ্রা যাওয়া।

 বয়স যখন তাঁর সত্তর একদিন এক নূতন ঘটনা ঘটল। সন্ধ্যার সময় নৌকা নিয়ে দেবদূত ঘাটে বসে আছেন কালো মেঘে আকাশ পৃথিবী সব ঢেকে গেছে মুহূর্ত্তের নাধাই মুষলধারে বৃষ্টি নাম্‌ল। কোলের মানুষ দেখা যায় না এমনি অন্ধকার, আকাশ ভেঙ্গে পড়ে এমনি জোর বৃষ্টির ধারা।

 একটি মানুষও আজ নৌকায় যাবার জন্যে এল না। আজ যার খুসী তার যেতে পারার দিন।

 দেবদূত ঘাটের কিনারায় বসে আছেন, নড়েন না।

 কিছুক্ষণ পরে সেই ঝাড় বাদল মাথায় করে এক ফকির ঘাটে এসে উপস্থিত। তিনি দেবদূতকে জিজ্ঞাসা করলেন “আজ নৌকাযাত্রা হবে না”?

 দেবদূত বল্লেন “হবে বই কি, এই আপনার জন্যেই অপেক্ষা।”