পাতা:দুনিয়ার দেনা - হেমলতা দেবী.pdf/২৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ফকিরের ফাঁক
১৯

আর কি সুন্দর তার হাওয়ার মত হাল্কা চলা ফেরা, হাত পা নাড়ার ভঙ্গী।

 আমার সেবার ভার পড়েছে এখন সেই মেয়েটির উপর। কলের মত মেয়েটি যখনই আমার কাছে আসে আমার চারিদিকে যেন ফুল ফুটে ওঠে। তার সবই যেন ফুলের মত। মুখখানি ফোটা ফুল—হৃদয়টি তারই সুগন্ধে ভরা। এমনতর সহজ, সুন্দর, স্নিগ্ধ, কোমল পরিপূর্ণ যত্ন কখনো দেখিনি। মানুষ যে কত সুন্দর হতে পারে এই প্রথম আমি তা দেখলুম।

 তাদের খাদ্য ছিল ভাত ও মাছ সিদ্ধ, তাতে তেল নুন মাখা। আর চাক ভাঙ্গা মধু, যত চাও। সময়ে সময়ে দু’চারটে বুনো ফলও মইনু পেড়ে আন্‌ত।

 ছাগ্‌লী যা দুধ দেয় আজকাল আমিই তার সবটুকু পাই—রুগ্ন বলে।

 তাদের যত্নে মাস দুয়েকের মধ্যেই আমি বেশ সুস্থ হয়ে উঠলুম। ভাবি এইবার বাড়ী যাব—যদিও জানিনে বাড়ী এখান থেকে কত দূরের পথ। কিন্তু এদের ছেড়ে যেতে মন একেবারেই চায় না—বিশেষত মইনুকে। মইনু, সে যে আগাগোড়াই ফুলের সুবাসে ভরা, সে যে দেবলোকের একটি মাত্র সাদা পারিজাত।

 ভাবি আজ যাব, কাল যাব, এমনি করে তিনমাস কাটল যাওয়া হল না। মইনুর বাপের নাম সূর্ত্তি, সবাই