পাতা:দুনিয়ার দেনা - হেমলতা দেবী.pdf/২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ফকিরের ফাঁক
২১

শান্ত হল। তখন আমাকে আর একেবারেই ছাড়তে চায় না। সেই দশ বছরের মেয়ে মইনু যেন আমার কণ্ঠের হার হয়ে আমার বুকে ঝুলতে লাগল, তাকে ফেলে যাই কোথা?

 সূর্ত্তির জন্যে আমার প্রাণেও বড় কান্নাটাই জেগেছিল। মইনুর জন্যে সেটা আমি চেপে রেখেছিলুম। আমি কাঁদলে তার শোক উথলে উঠবে। সূর্ত্তি আমাকে বাঁচাল, এ প্রাণটা এক রকম তারই দেওয়া, কিন্তু তার বদলে সে আমার কাছ থেকে, আমার রাজা বাপের কাছ থেকে, কোন পুরস্কার না নিয়েই চলে গেল। সে জানল না যে সে এক রাজপুত্রকে বাঁচিয়েছে তার অনেক দাবী, অনেক পাওনা। তাকে যে আর কখনো মাছ ধ’রে খেতে হবে না এ কথা সে শুনে গেল না। হায় হায় কি দুঃখ! যাই হোক্ এর কিছু প্রতিদান তো আমাকে দিতেই হবে। তার মইনুকে চিরজীবন আমার গলায় গেঁথে রাখতেই হবে। তাতে যাই হোক্‌।

 একেই মইনু আমার চোখের সামনে, হৃদয়ের সামনে ফুলের মত ফুটে থাকে তার উপর এই কৃতজ্ঞতা তার কাছে যেন আমাকে বিকিয়ে দিল। আমার সবটা এখন তারই।

 মইনুর বাপের একখানা ভাঙ্গা নৌকা ছিল। সেখানা পড়ে থাকত—কাজে লাগত না। আমি সেখানা সারিয়ে