পাতা:দুনিয়ার দেনা - হেমলতা দেবী.pdf/২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২২
দুনিয়ার দেনা

নিলুম। মইনুকে সঙ্গে নিয়ে সেই নৌকায় চড়ে মাছ ধ’রে প্রতিদিন গাঁয়ে বেচে আসতে আরম্ভ করলুম। এতেই এখন মইনুর ও আমার চলে।

 দু বৎসর কেটে গেল মইনু আমাকে ছেড়ে থাকেনি আমিও মইনুকে ছেড়ে থাকিনি।

 মইনুর শরীর অসুস্থ, সকালে উঠেই জানাল আজ সে আমার সঙ্গে যেতে পারবে না। সেদিন আমি একাই গেলুম। ফিরে এসে দেখি মইনুর ভয়ানক জ্বর গা পুড়ে যাচ্ছে। দেখেই ভয়ে আমার বুকটা কেঁপে উঠল। সে চমকে উঠে আমাকে বল্লে “ঐ যে বাবা এসেছে, দেখতে পাচ্ছ না। তুমি আমার কাছে এসে বস, আমার ভয় করছে, বাবা আমাকে নিয়ে যাবে”। আমি বল্লুম, “মইনু কি বলছ, এখানে তো আর কেউ নেই কেবল আমি আর তুমি, ঘুমোও”। আমার কথা শুনে একটু সচেতন হয়ে মইনু বলে “ওঃ তুমি আর আমি, কি ভুল বকছিলুম। এখানে বস আমি তোমার কোলে মাথা রেখে একটু ঘুমোই। দেখ যেন ঘুম ভাঙ্গলে, চোখ মেলে তোমাকে আবার দেখতে পাই। আমার ভয় করে পাছে জেগে তোমাকে আর না দেখি”।

 মইনুর মাথাটি কোলে নিয়ে সারারাত আমি জেগে বসে রইলুম। সারারাতের মধ্যে মইনুর আর জ্ঞান হল না। ভোরের দিকে দু একবার জল জল বলে চীৎকার