পাতা:দুনিয়ার দেনা - হেমলতা দেবী.pdf/৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৮
দুনিয়ার দেনা

 সমুদ্রের বুকের উপর দিয়ে কত বড় বড় বাণিজ্য জাহাজ রাতদিন আসা যাওয়া করে। যাবার পথে কত দেশের কত লোক, সমুদ্রতীরের এই বুড়ো সহরটা দেখতে দেখতে যায়। দেখে কেউ মুখ ফেরায়, কেউ ঠাট্টার ভাবে হাসে, কেউ গলা ছেড়ে গাল দেয়, “সহরটার এমন ছিরি ছি ছি সহরের লোকগুলো কি মরেছে? একবার চোখ মেলে নিজেদের সহরটার দিকে কেউ চেয়ে দেখে না।

 যে যা বলে বলুক, যে যা ভাবে ভাবুক, সহরের লোকেরা এ সব কোন কিছু গায়েই মাখে না, এ সব কোন কথা কানেই তোলে না। অলস হয়ে একই রকমে তারা দিনের পর দিন কাটায়। ভাবে পূর্ব্ববপুরুষ তপের জোরে সহরটাকে কায়েমি করে রেখে গেছেন কোনো কালে এর আর মার নেই। কারো সাধ্য নেই যে সেখান থেকে তাদের তাড়ায়। এমন কি স্বয়ং রাজাও তা পারেন না।

 এইটুকু নিয়েই, এর অহঙ্কারেই তারা মত্ত। ওদিকে শকুনি গৃধিনী এসে মৃতদেহগুলোকে ছিঁড়ে ছিঁড়ে খাচ্ছে, সহরে মড়া ফেলার লোক নেই সেদিকে কারো চোখ পড়ে না।