পাতা:দুনিয়ার দেনা - হেমলতা দেবী.pdf/৫৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৮
দুনিয়ার দেনা

 স্ত্রীলোকটি নিজের অন্তরের মধ্য থেকে কেমন যেন একটা সাড়া পেতে লাগল; খানিক স্তব্ধ হয়ে ব’সে সে উঠে আস্তে আস্তে বাড়ীর দিকে চল্‌ল।

 স্ত্রীলোকটি পথ দিয়ে যায়, আজ আর পথের কোন কিছু তার চোখে পড়ে না। সব যেন ধোঁয়া, সব যেন ছায়া। আজ সে কি অন্যমনস্ক: মাথার ভিতর তার কেবলই ঘুরছে, “বেরিয়ে পড়, পথে বেরিয়ে পড়।” সে জানে না, কোথায় বেরবে, কোন পথে যাবে; জানে না, সে পথের আরম্ভ কোথায়।

 মানুষটি তাকে বলেছে ঘরে বসে পথ দেখতে পাবে। আজ তো তার ঘর বলে কিছু নেই। ঘরে তার কে আছে? যারা আছে তারা তো তার কেউ নয়! তারা তো পথের মানুষ নয়! তবে সেখানে সে কার কাছে যাবে? কতকটা স্পষ্ট কতকটা অস্পষ্ট ভাবে এই রকম নানা কথা এলো মেলো হয়ে তার মাথার মধ্যে ঘুরতে লাগল।

 কতক্ষণ সে নিজের বাড়ীর সামনে এসে দাঁড়িয়েছে জানে না। সন্ধ্যা তখন উত্তীর্ণ। বাড়ীটার দিকে চাওয়া মাত্র মনে হল পৃথিবী যেন তার পায়ে নীচে থেকে সরে যাচ্ছে, পায়ের নীচে যেন মস্ত একটা গহ্বর তার মধ্যে সে যেন আস্তে আস্তে নেমে যাচ্ছে, চোখের সামনে বাড়ীখানা দুলছে এখুনি ভেঙ্গে তার মাথার উপর পড়ে তাকে