পাতা:দুনিয়ার দেনা - হেমলতা দেবী.pdf/৬১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কাপালিকের কপাল
৫৫

কর হে পার কর হে পার কর, এই পারের এই দুখের কথা আর কইতে নারি যে, পার কর।

 গানের সুর অন্ধ কারের বুকের উপর ছড়িয়ে পড়ে তাকে যেন নিবিড়ভাবে জড়িয়ে ধরতে লাগল। নিস্তব্ধতা তখনও অটল মূর্ত্তিতে দাঁড়িয়ে, সুরের স্পর্শ তার বুকের ভিতর কেবল একটু একটু কাঁপন তুলেছে। অন্ধকার ছাপিয়ে, নিস্তব্ধতা কাঁপিয়ে ক্রমেই সুর পর্দ্দায় পর্দ্দায় ওঠা নামা করতে লাগল, সন্ন্যাসিনী গাইছে ‘ভার হর হে ভার হর হে ভার হর, এই পারের এই ভারের ভার আর বইতে নারি যে ভার হর’।

 সন্ন্যাসিনীর গলা চমৎকার। শেখা গলা ছাড়া সুরের এমন খেলা, এমন মূর্চ্ছনা, এমন গতি ভঙ্গী, তাল মান লয়ের এমন সুন্দর সামঞ্জস্য হতেই পারে না। সন্ন্যাসিনী সুগায়িকা। গলার মিষ্টি আওয়াজে সুরের এই আশ্চর্য্য খেলা অন্ধকারের বুকটাকে যেন ভিজিয়ে তুলতে লাগল, অন্ধকার নিজের বুক পেতে তার বুকের ভার নামিয়ে নেবার জন্যে যেন কাছে এসে দাঁড়াল। একটু থেমে, বুক ভাঙ্গা একটা নিশ্বাস ফেলে সন্ন্যাসিনী আবার গাইতে লাগল ‘পাপ তার হে, পাপ তার হে, পাপ তার, এই পারের এই পাপের তাপ আর সইতে নারি যে পাপ তার।’

 গানের এই কলিটি শেষ হতে না হতে পিছন থেকে একজন বলে উঠ্ল‌ “কে তুমি”? সন্ন্যাসিনী মাথা তুলে