পাতা:দুনিয়ার দেনা - হেমলতা দেবী.pdf/৭২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬৬
দুনিয়ার দেনা

 মধুমতী অন্যমনস্ক ভাবে জিজ্ঞাসা করল, “তীর্থে কবে যেতে হবে?

 দৈ। কালই।

 দৈবপ্রভার যেমন কথা অমনি কাজ সুরু। তার শরীর মন বুদ্ধির কোনখানে যেন কিছুমাত্র জড়তা নেই। সমস্তটাই নিরলস, আগাগোড়াই যেন ঝরঝর তরতর করছে।

 তখুনি স্থির হয়ে গেল কাল ভোরেই তীর্থের জন্য বেরতে হবে।

 সন্ন্যাসিনীর দল মহা খুসী। নূতন জায়গায় যাবে চারদিক দেখবে, ঘুরে ঘুরে বেড়াবে এতে তাদের বড় আনন্দও। উৎসাহের সঙ্গে তারা আয়োজনের কাজে লেগে গেল। দৈবপ্রভার কথামত একরাশ ছোলা, একরাশ কাঁচা চিঁড়ে, গাওয়া ঘিতে পাক করা, বড় থলের এক থলে সুজির লাড়ু, আশ্রমের গাছের শুকিয়ে রাখা বাদাম থলে ভরে বেঁধে সঙ্গে নিল। এ ছাড়া পথে যেখানে যা যোগাড় হয় বন জঙ্গলের ভিতর দিয়ে যেতে অনেক ফল মূল তুলে নিতে পারবে, নদী আর ঝরণার জল তো আছেই। তারা বাইশ জন, প্রত্যেকের সঙ্গে একটা করে কম্বল আর মোটের উপর গোটা পাঁচ ছয় ঘটি। মোটামুটি এই তাদের পথের সম্বল। লুকন ছোরা দুচার খানা সঙ্গে অবশ্য যাবে।