আয়োজন সেরে সন্ধ্যা হতেই সন্ন্যাসিনীর দল শুয়ে পড়ল খুব ভোরে উঠতে হবে বলে।
সবাই ঘুমচ্ছে মধুমতীর চোখে ঘুম নেই। দৈবপ্রভার দিনের কথাগুলো তার বুকের উপর যেন আসন বিছিয়ে বসেছে। তাদিকে সে সরাতে পারছে না। একলাটি উঠে আশ্রমের ভিতরকার প্রকাণ্ড একটা বটগাছের তলায় গিয়ে সে বসলো। পায়ের শব্দে গাছের ঘুমন্ত বাদুড়গুলো একবার ডানা ঝাড়া দিয়ে নড়ে উঠল, তারপর আবার সব চুপ। মধুমতী তখনও অন্যমনস্কও, সে নিজের মনে গাইছে—
আছ যদি কেন আসিছ না কাছে
কেন হয়ে আছ দূর পরবাসী
কেনহে এমনে রয়েছ গোপনে,
প্রাণ মনে কেন উঠিছ না ভাসি
আজ মধুমতীর মনটা বড় শুন্য সব যেন খালি। একটু থেমে আবার মধুমতী গাইতে লাগল
থাক যদি তবে থাকিওনা দূরে,
মনে এস মম মনোসাধ-পুরে,
শুনি আছ তবু হিয়ায় না ধরে
তোমা লাগি প্রাণ হয়েছে উদাসী।
মধুমতীর গলার আওয়াজ কি মিষ্টি, গানের সুরে চারদিকটাকে যেন মধুময় করে তুলল, নিজের গানে সে নিজেই বুকের মধ্যে অনেকখানি আরাম পেতে লাগল,