পাতা:নিগ্রোজাতির কর্ম্মবীর - বিনয়কুমার সরকার (১৯১৪).pdf/১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নিগ্রোজাতির কর্ম্মবীর

এই কার্য্য বড়ই কষ্টদায়ক হইয়া উঠিত। আবাদ হইতে কল তিন মাইল দূরে। একটা ঘোড়ার পীঠের উপরে শস্যের প্রকাণ্ড বোঝা চাপান হইত—বোঝাটা ঘোড়ার দুই পার্শ্বে ঝুলিতে থাকিত। আমি মধ্যস্থলে বসিতাম। মাঝে মাঝে দুর্দ্দৈবক্রমে বোঝাটা ঘোড়ার পীঠ হইতে পড়িয়া যাইত—আমিও চীৎপাত হইয়া পড়িতাম। আমার সাধ্য ছিল না যে আমি একা সেই বোঝা অশ্বপৃষ্ঠে তুলি। একাকী নির্জ্জন রাস্তায় বহুক্ষণ বসিয়া থাকিতাম—কাঁদিয়া কাটাইতাম। হঠাৎ কোন লোক সেই দিক দিয়া গেলে তাহার সাহায্যে মাল ঘোড়ায় চড়াইয়া কলে পৌঁছিতাম। ইহাতে সময়ে সময়ে এতক্ষণ লাগিত যে কলে কাজ সারিয়া গৃহে ফিরিতে বেশ রাত্রি হইয়া যাইত। অন্ধকারপথে বড়ই ভয় পাইতাম। স্থানে স্থানে ঘন জঙ্গল ছিল—তাহার মধ্যে না কি চাকুরী ত্যাগ করিয়া শ্বেতাঙ্গ সৈন্যাদি বাস করিত। শুনিয়াছিলাম—একা পাইলেই তাহারা নিগ্রো বালকের কাণ কাটিয়া রাখিত। সুতরাং ঐ রাস্তায় যাওয়া-আসা আমার পক্ষে বিষম উৎপাত বোধ হইত। বিশেষতঃ বেশী রাত্রে ঘরে ফিরিলে আবার জুতা লাথি গালি খাওয়ার সুব্যবস্থাও ছিল।

 গোলামী করিতে করিতে আমি কখনও শিক্ষালাভের জন্য বিদ্যালয়ে যাই নাই। অবশ্য বিদ্যালয়-গৃহের ফটক পর্য্যন্ত অনেকবারই গিয়াছি। আমার মনিবদের সন্তান-সন্ততিরা স্কুলে যাইত। আমি তাহাদের সঙ্গে সঙ্গে পুস্তকাদি বহিয়া লইতাম। দূর হইতে দেখিতাম বিদ্যালয়ের ঘরগুলিতে ছেলে-মেয়েরা দলে