পাতা:নিগ্রোজাতির কর্ম্মবীর - বিনয়কুমার সরকার (১৯১৪).pdf/১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
গোলামাবাদের আব্‌হাওয়া

দলে লেখা পড়া শিখিতেছে। সেই দৃশ্য আমার চিত্তে কি অপূর্ব্ব ভাবই না সৃষ্টি করিত! ঐরূপ একটা গৃহে প্রবেশ করিয়া লেখাপড়া করিতে পারা আমার নিকট স্বর্গ-প্রবেশের ন্যায় সুখকর মনে হইত।

 আমরা যে গোলাম বা ক্রীতদাস তাহা আমি অনেকদিন পর্য্যন্ত জানিতাম না। আমাদিগকে স্বাধীন করিয়া দিবার জন্য দেশব্যাপী যে আন্দোলন চলিতেছিল তাহাও বুঝিতে পারি নাই। একদিন সকালে জাগিয়া দেখি আমার মাতা আমাদিগকে সম্মুখে রাখিয়া ভগবানের নিকট প্রার্থনা করিতেছেন:—“হে জগদীশ্বর, সেনাপতি লিঙ্কল্‌নের সৈন্যদল যেন জয়লাভ করে। হে অনাথের নাথ, আমরা সপরিবারে এবং সদলবলে যেন স্বাধীন হই। হে পতিত-পাবন, এই অবনত দাসজাতিকে বন্ধন-মুক্ত কর।”

 বলা বাহুল্য, গোলামাবাদের আমার স্বজাতিরা সকলেই নিরক্ষর ছিল। কেহই লেখাপড়া, পুস্তক, গ্রন্থালয়, সংবাদপত্র ইত্যাদির ধার ধারিত না। তথাপি দেখিতাম প্রায় সকলেই দেশের কথা বেশ জানিত ও বুঝিত। যুক্তরাজ্যের মধ্যে যে একটা বিরাট বিপ্লব উপস্থিত হইয়াছে তাহা কাহারই অজানা ছিল না। কবে কোথায় কি ঘটিতেছে দাসজাতির সকলেই তাহা বুঝিতে ও শুনিতে পাইত। আমাদিগকে স্বাধীন করিবার জন্য যুক্তরাজ্যের উত্তরপ্রান্তবাসী গ্যারিসন, লাভজয় ইত্যাদি মানবসেবকগণ যে দিন হইতে আন্দোলন শুরু করেন,—আশ্চর্য্যের বিষয় সেইদিন হইতেই দক্ষিণপ্রান্তের গোলামাবাদের মহলে