পাতা:নিগ্রোজাতির কর্ম্মবীর - বিনয়কুমার সরকার (১৯১৪).pdf/১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০
নিগ্রোজাতির কর্ম্মবীর

কোন দ্রব্য মুখে দিতাম। কাঁটা চামচ ইত্যাদির প্রয়োজন হইবে কোথা হইতে? ঠিক নিয়মিতরূপে যথাবিধি পানভোজনেরই যে ব্যবস্থা ছিল না! যখন কিছু বড় হইলাম, তখন বড় কুঠির সাহেব প্রভুর আহারের সময়ে পাখা টানিতে নিযুক্ত হইয়াছিলাম। এই উপায়ে মাছি তাড়াইতে তাড়াইতে মনিবপরিবারের কথোপকথন শুনিতে পাইতাম। অনেক সময়ে গুপ্তকথাও বাহির হইয়া পড়িত। লড়াই সম্বন্ধে তাঁহাদের মতামত বুঝিতে পারা যাইত। সময়ে সময়ে তাঁহাদের খানা দেখিয়া যথেষ্ট লোভও হইত। আর মনে হইত কোনও দিন ঐরূপ এক থালা অন্নব্যঞ্জন যদি আমার ভাগ্যে জুটে, তাহা হইলে আামার স্বাধীনতার চূড়ান্ত ফললাভ হইবে!

 সংগ্রাম চলিতে লাগিল। আমার শ্বেতাঙ্গ প্রভুদের খাওয়াপরার বড়ই কষ্ট হইল। দূরদেশ হইতে চা, কাফি, চিনি ইত্যাদি আসিলে তবে মনিবদের গৃহস্থালী চলে। কিন্তু ক্রমশঃ এ সব দুর্ল্লভ হইল। তাঁহাদের দুঃখের আর সীমা রহিল না। গোলামজাতির কিন্তু বিশেষ কোন অসুবিধা হয় নাই। কারণ আমরা অত পরমুখাপেক্ষী ত ছিলাম না। আমাদের আবাদেই যে সব শস্য জন্মিত তাহাতেই আমাদের ভরণ-পোষণ স্বচ্ছন্দে চলিত। আর শূকর পালন ত সহজেই আমরা নিজ মহাল্লায় করিতাম। কাজেই লড়াই বাধিবার পর প্রভুদের দুর্গতি দেখিয়া আমরা বিব্রত হইলাম। আমাদের অবস্থা ‘যথাপূর্ব্বং তথাপরং’। তাঁহারা অনেক সময়ে বাধ্য হইয়া চিনির পরিবর্ত্তে ময়লা গুড় দিয়াই চা