পাতা:নিগ্রোজাতির কর্ম্মবীর - বিনয়কুমার সরকার (১৯১৪).pdf/১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
গোলামাবাদের আব্‌হাওয়া
১১

খাইতেন। অনেক সময়ে আবার সেই গুড়ও যোগাইতে পারিতাম না। মিষ্ট না দিয়াই তাঁহাদিগকে অনেক দিনে চা পান করিতে হইয়াছে। আবার যখন প্রকৃত চা বা কাফিও থাকিত না, তখন তাঁহারা মুড়ি বা চিঁড়ে ভাজা অথবা অন্য কোন শস্যের গুঁড়া ভিজাইয়া ‘দুধের সাধ ঘোলে’ মিটাইতেন।

 আমি জীবনে সর্ব্বপ্রথম যে জুতা পরি, তাহা কাঠের তৈয়ারী। উপরিভাগে কিছু চামড়া ছিল। তাহা পরিতে পায়ের তলায় বড়ই লাগিত। কাঠের জুতা তবুও ভাল—কিন্তু গোলামীর আমলে আমাদিগকে যে জামা পরিতে হইত তাহা অতি ভয়ঙ্কর। বোধ হয় দাঁত টানিয়া তুলিতে যে কষ্ট হয় এই জামা পরিতে তাহা অপেক্ষা কম কষ্ট হইত না। ভার্জ্জিনিয়ার গোলামাবাদে খুব মোটা খড়্‌খড়ে চটের শার্ট পরিতে দেওয়া হইত। ইহার নূতন অবস্থায় অসংখ্য কাঁটা বাহির হইয়া থাকিত। গায়ের চামড়ায় কাঁটাগুলি বিঁধিয়া অসহ্য যন্ত্রণা দিত। আমার চামড়া কিছু নরম—সেজন্য কষ্ট অত্যধিকই বোধ করিতাম। কি করিব?—বাদবিচারের অবসর ছিল না। তাহাই পরিতে হইবে নতুবা অন্য কোন গাত্রাচ্ছাদন পাইব না। আমার দাদা ‘জন’ একবার দাসমহলের পক্ষে অসামান্য উদারতা দেখাইয়াছিল। চটের নূতন জামা পরিতে আমার কষ্ট দেখিয়া সে নিজেই ১০।১৫ দিন সেটা পরিল। যখন ভিতরকার কাঁটাগুলি তাহার গায়ে লাগিয়া ঘষিয়া গেল, তখন হইতে আমি সেই জামাটা ব্যবহার