পাতা:নিগ্রোজাতির কর্ম্মবীর - বিনয়কুমার সরকার (১৯১৪).pdf/২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
গোলামাবাদের আব্‌হাওয়া
১৩

তাঁহাদের স্ত্রীপুত্রদিগকে রক্ষা করিতাম। সমস্ত পরিবারের ‘ইজ্জৎ’ এবং সম্পত্তির রক্ষণাবেক্ষণ আমাদের হাতেই থাকিত। নিগ্রোজাতির সত্যনিষ্ঠা, হৃদয়বত্তা এবং কর্ত্তব্যপরায়নতার আর কোন প্রমাণ আবশ্যক কি?

 অধিক কি, নিগ্রোরা অনেকক্ষেত্রে তাঁহাদের পূর্ব্ব মনিবদিগকে অন্নবস্ত্র দিয়া মানুষও করিয়াছে। চিরদিন সকলের সমান যায় না। আজ যে রাজা কাল সে গোলাম, আজ যে দাস কাল সে প্রভু। সুখদুঃখ চক্রের মত ঘুরিতেছে। দক্ষিণপ্রান্তের শ্বেতাঙ্গ প্রভুসম্প্রদায়ের অনেকেই যুদ্ধের ফলে নিঃস্ব হইয়া পড়িয়াছিলেন। আমি জানি সেই দুঃখের সময়ে তাঁহাদের পূর্ব্বর্তন গোলামেরা তাঁহাদিগকে অর্থ সাহায্য করিত। আমি জানি এইরূপে গোলামজাতির দানে মনিব-সন্তানসন্ততিরা লেখাপড়া শিখিয়াছে। একজন মনিব-পুত্র চরিত্রহীনতার ফলে ঋণগ্রস্ত হইয়া পড়ে। আমি জানি গোলামেরা নিজেদের দারিদ্র্য সত্ত্বেও চাঁদা তুলিয়া এই পাপাত্মা প্রভু-সন্তানকে বাঁচাইয়া রাখিতে কুণ্ঠিত হয় নাই। কেহ তাঁহাকে কাফি পাঠাইয়া দেয়, কেহ বা চিনি কেহ বা মাংস দেয়। এই দানের উপর নির্ভর করিয়া সেই ব্যক্তি এখনও জীবন ধারণ করিতেছে। পুরাতন মনিবের পুত্ত্র বা দূর আত্মীয় বলিয়া যদি কোন ব্যক্তি নিগ্রোর নিকট আসিয়া উপস্থিত হয় এবং নিজের কষ্ট জ্ঞাপন করে, তাহা হইলে, আমি সদর্পে বলিতে পারি, দক্ষিণপ্রান্তে এমন কোন নিগ্রো নাই যে, তাহাকে যথাসাধ্য সাহায্য না করিবে।