পাতা:নিগ্রোজাতির কর্ম্মবীর - বিনয়কুমার সরকার (১৯১৪).pdf/২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৮
নিগ্রোজাতির কর্ম্মবীর

তাঁহারই করুণায় আমরা আরও উন্নত হইব। নিগ্রো-জাতি জগতের বিরাট কর্ম্মক্ষেত্রে তাহার স্বকীয় কৃতিত্ব দেখাইয়া জগদীশ্বরের অসীম ক্ষমতার পরিচয় দিবে।

 আমি বলিলাম গোলামীর ফলে আমাদের যথেষ্ট উপকার হইয়াছে। অবশ্য অপকারও কম হয় নাই। কিন্তু আমার বিশ্বাস—আমাদের শ্বেতাঙ্গ প্রভু মহোদয়গণেরই ক্ষতি বেশী হইয়াছে। মনিব মহাশয়েরা বিলাসে ডুবিতে লাগিলেন। শারীরিক পরিশ্রম তাঁহাদের কষ্টকর বোধ হইত। বড় মহলে খাটিয়া খাওয়া একটা নিন্দনীয় কার্য্য বিবেচিত হইত। ক্রমশঃ তাঁহারা সকল বিষয়ে স্বাবলম্বন, এবং আত্মশক্তিতে বিশ্বাস হারাইলেন। প্রভুগণের সন্তানেরা কেহই কোন কৃষি বা শিল্পের পটুত্ব লাভ করিতে শিখিল না। মনিবের কন্যারা কেহই রাঁধিতে, শেলাই করিতে অথবা ঘর ঝাড়িতেও শিখিল না। সকল কাজই দাসেরা করিত। কিন্তু গোলামদিগের স্বার্থ আর কতটুকু? তাহারা কোন উপায়ে কাজ সারিয়া মনিবকে সন্তুষ্ট করিতে চেষ্টা করিত মাত্র। সুচারুরূপে বুদ্ধি খাটাইয়া কাজ করিতে দাসেরা শিখিত না। ফলতঃ, প্রভুপরিবারে কোন শৃঙ্খলা দেখিতে পাইতাম না। লক্ষ্মীশ্রী যাহাকে বলে মনিবমহলের গৃহস্থালীতে তাহার পরিচয় পাওয়া যাইত না। ঘর ভালরূপ পরিষ্কৃত থাকিত না। জানালার খড়খড়িগুলি ভগ্নাবস্থায় বহুদিন পড়িয়া থাকিত। জানালার খিল না থাকিলে তাহা লাগাইবার জন্য কেহই মাথা ঘামাইত না। যাহা যেখানে পড়িত তাহা সেখানে সেই অবস্থাতেই পচিত।