পাতা:নিগ্রোজাতির কর্ম্মবীর - বিনয়কুমার সরকার (১৯১৪).pdf/২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
গোলামাবাদের আব্‌হাওয়া
১৯

খাওয়া দাওয়ারও সুখ মনিব-মহলে দেখি নাই। কোন দিন ঝাল বেশী পড়িত—নুন কম পড়িত। কখনও তাঁহারা মাংস আধ কাঁচাই খাইতেন—কোন দিন বা বেশী পোড়া খাদ্যই তাঁহাদের কপালে জুটিত। অর্থব্যয় কম হইত না—সকল বিষয়েই অপব্যয় যৎপরোনাস্তি হইত। পূর্ব্বেই বলিয়াছি লক্ষ্মীশ্রী মনিব-মহল হইতে বিদায় লইয়াছিল।

 ক্রমশঃ দেখা গেল যে, গোলামেরাই মনিবসমাজ অপেক্ষা বেশী সুখে আছে। যে সময়ে মনিবেরা বিলাসসাগরে ভাসিয়া অকর্ম্মণ্য ও নিস্তেজ হইয়া পড়িতেছিলেন, সেই সময়ে গোলামেরা সকলেই কর্ম্মনিষ্ঠা, পরিশ্রম-স্বীকার, ইত্যাদি সদ্‌গুণ অর্জ্জন করিতেছিল। যখন তাহারা স্বাধীনতা পাইল তাহাদের পক্ষে নবজীবন আরম্ভ করিতে বিশেষ কোন কষ্ট হইল না। গোলামীর যুগের শিক্ষাই স্বাধীনতার যুগের কাজকর্ম্মের জন্য তাহাদিগকে প্রস্তুত করিয়া তুলিয়াছিল। কেবলমাত্র পুঁথিগত বিদ্যারই তাহাদের অভাব ছিল। তাহা ছাড়া অনেক বিষয়েই তাহাদের চরিত্র ও বুদ্ধি মার্জ্জিত হইয়াছিল। বিশেষতঃ তাহারা কোন না কোন কৃষিকর্ম্মে বা শিল্পকার্য্যে অভ্যস্ত হইয়া গিয়াছিল। কিন্তু মনিব মহাশয়দের অবস্থা বড়ই শোচনীয় হইল। তাঁহারা গোলামদিগকে খাটাইতে খাটাইতে নিজেরাই সকল বিষয়ে যথার্থ গোলাম, পরমুখাপেক্ষী ও পরনির্ভর হইয়া পড়িয়াছিলেন।

 দেখিতে দেখিতে লড়াই শেষ হইয়া গেল। আমরা মুক্তি পাইলাম। গোলামাবাদে মহা আনন্দের রোল উঠিল। আমরা