পাতা:নিগ্রোজাতির কর্ম্মবীর - বিনয়কুমার সরকার (১৯১৪).pdf/২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
গোলামাবাদের আব্‌হাওয়া
২১

ভৌতিক শরীরেরই মুক্তি—অন্নবস্ত্র, চলা-ফেরা ইত্যাদি সকল বিষয়ের বন্ধনহীনতা।

 সেই মহা আনন্দের দিনের পূর্ব্ব রাত্রে গোলামখানার মহলে মহলে সংবাদ পাঠান হইল “কাল সকালে প্রভুদের বড় কুঠিতে একটা বিশেষ সম্মিলন হইবে। তোমরা সকলেই উপস্থিত হইও।” সেই রাত্রে আমাদের আর ঘুম হইল না। সকালে উঠিয়াই আমরা প্রভুর গৃহে সমবেত হইলাম। দেখিলাম মনিব-পরিবারের সকলেই বারান্দায় দাঁড়াইয়া বা বসিয়া আছেন। সকলকেই যেন কিছু চিন্তিত ও উদ্বিগ্ন দেখিলাম—কিন্তু কাহাকেও বিশেষ দুঃখিত বলিয়া বোধ হইল না। বরং মনে হইতে লাগিল যে তাঁহারা আর্থিক ক্ষতির জন্য বেশী চিন্তা করিতেছেন না—তাঁহারা যে এতদিনের সঙ্গী ও আত্মীয়গণকে একদিনে বিদায় দিবেন সেই দুঃখেই তাঁহাদের চিত্ত ভরিয়া রহিয়াছে। আর দেখিলাম একখন নূতন পুরুষকে, ইনি বোধ হয় যুক্তরাজ্যের কোন কর্ম্মচারী। তিনি একটা লম্বা কাগজ হাতে করিয়া একটা ক্ষুদ্র বক্তৃতা করিলেন। তার পর সেই কাগজ হইতে পাঠ করিলেন—স্বাধীনতার ঘোষণা।

 পড়া শেষ হইয়া গেল, আমাদিগকে বলা হইল যে আমরা স্বাধীন হইয়াছি। যাহার যেখানে ইচ্ছা যাইতে পারি। এখন হইতে যাহার যে কাজ ভাল লাগে সে সেই কাজই করিতে পারে। আমার মাতা আমাদের সঙ্গে ছিলেন। তাঁহার চক্ষু হইতে আনন্দাশ্রু ঝরিতে লাগিল। তার পর তিনি বলিলেন যে,