পাতা:নিগ্রোজাতির কর্ম্মবীর - বিনয়কুমার সরকার (১৯১৪).pdf/৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আমার বাল্য-জীবন
২৭

মনিবগণের নিকট হইতে বিদায় গ্রহণ করিলাম। সে দৃশ্য অতিশয় হৃদয়বিদারক। সেই চির-বিদায়ের কথা সর্ব্বদা আমার মনে আছে। তাঁহাদের সঙ্গে এখন পর্য্যন্ত আমি চিঠি-পত্রের আলাপ রক্ষা করিয়া আসিয়াছি। এখনও তাঁহাদিগকে ভুলিতে পারি নাই।

 রাস্তায় কয়েক সপ্তাহ কাটিয়া গেল। খোলা মাঠে শুইতাম, গাছতলায় রাঁধিয়া খাইতাম। এক রাত্রে একটা পুরাতন ভাঙ্গাবাড়ী পাইয়া আমার মাতা তাহার মধ্যে রন্ধনের আয়োজন করিতে লাগিলেন। সেই বাড়ীতে একটা ‘ষ্টোভ’ ছিল। ষ্টোভের ভিতর আগুন জালিবা মাত্র উহার নলের ভিতর হইতে একটা প্রকাণ্ড কাল সাপ বাহির হইয়া আসিল। আমরা ‘ত্রাহি ত্রাহি’ ডাক ছাড়িয়া সেই গৃহে ভোজন-শয়নের আকাঙ্ক্ষা ত্যাগ করিলাম। এইরূপে নানা সুখদুঃখের অভিজ্ঞতা লাভ করিতে করিতে আমাদের গন্তব্য স্থানে পৌঁছিলাম। নগরটি ক্ষুদ্র—নাম ম্যাল্‌ডেন। ইহার পাঁচ মাইল দূরেই ওয়েষ্ট ভার্জ্জিনিয়াপ্রদেশের রাজধানী বা প্রধান নগর চার্লষ্টন।

 এই সময়ে ওয়েষ্ট ভার্জ্জিনিয়ায় নুনের কারবার বেশ চলিতেছিল। আমাদের নগরের ভিতরেই এবং আশেপাশে অনেকগুলি নুনের কল ছিল। এইরূপ একটা কলে আমার মাতার স্বামী একটা চাকরী পাইয়াছিলেন। তাহার নিকটেই তিনি একটা কামরাও সংগ্রহ করিয়াছিলেন। এই কামরা আমাদের পুরাতন গোলামখানার কুঠুরী অপেক্ষা খারাপই