পাতা:নিগ্রোজাতির কর্ম্মবীর - বিনয়কুমার সরকার (১৯১৪).pdf/৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৮
নিগ্রোজাতির কর্ম্মবীর

হইবে, কোন অংশেই ভাল নয়। গোলামাবাদের কুঠুরিগুলি যেরূপই থাকুক না কেন, তাহার বাহিরে আসিলে নির্ম্মল বাতাস যথেষ্টই পাইতাম। কিন্তু এই স্বাধীন বাসভবনে ইহার অভাব যৎপরোনাস্তি। কামরাগুলি এত লাগালাগি এবং চারি ধারে এত ময়লা জমিয়া থাকে যে একটা প্রকাণ্ড নরকের মধ্যে আমরা বাস করিতেছি মনে হইত।

 আমাদের প্রতিবেশীদের মধ্যে সাদা কাল দুই প্রকার লোকই ছিল। সাদা চামড়ার লোকেরা অবশ্য শ্বেতাঙ্গ-সম্প্রদায়ের অতি নিম্নশ্রেণীর অন্তর্গত। তাহাদের না ছিল বিদ্যাবুদ্ধি, না ছিল পরিচ্ছন্নতা, না ছিল ধর্ম্ম-ভয়। বরং অধর্ম্ম, অস্বাস্থ্য, অজ্ঞতা এবং কুসংস্কার যেন সেই আবহাওয়ার মধ্যে অপ্রতিহতগতিতে বিরাজ করিত।

 পাড়ার প্রায় সকলেই নুনের কলে কাজ করিত। আমার বয়স অত্যন্ত অল্পই ছিল। তথাপি আমার মাতার স্বামী আমাকে একটা কাজে লাগাইয়া দিলেন। আমার দাদাও একটা কাজে লাগিয়া গেল। আমাকে প্রত্যূষে চারিটা হইতে কাজ করিতে হইত।

 এই নুনের কলে কাজ করিতে করিতে আমার প্রথম কেতাবীশিক্ষা লাভ হয়। নুন বস্তাবন্দি করিবার পর বস্তার গায়ে একটা করিয়া নম্বর বসাইবার নিয়ম ছিল। আমার অভিভাবকের চিহ্ন ছিল ১৮। প্রতিদিন কলের কাজ শেষ হইবার সময়ে কলের একজন বড় সাহেব আসিয়া আমার অভিভাবকের বস্তাগুলির উপর