পাতা:নিগ্রোজাতির কর্ম্মবীর - বিনয়কুমার সরকার (১৯১৪).pdf/৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩২
নিগ্রোজাতির কর্ম্মবীর

 যাহা হউক, আমাদের জাতীয় বিদ্যালয় ত প্রতিষ্ঠিত হইল। কিন্তু আমার কপাল ফিরিল না। আমি বিদ্যালয়ে ভর্ত্তি হইতে পাইলাম না। আমার অভিভাবক আমাকে নুনের কলে খাটাইয়া অর্থ সঞ্চয় করিতে লাগিলেন। বড়ই অনুতাপের বিষয় হইত যখন আমি কল হইতে দেখিতাম যে, আমারই সমানবয়স্ক নিগ্রোবালকেরা সকালে সন্ধ্যায় স্কুলে যাওয়া আসা করিতেছে। অবশ্য আশা ছাড়িলাম না। আমি আমার সেই ওয়েব্‌ষ্টারের ‘প্রথম ভাগ’ই পূর্বের ন্যায় পড়িতে থাকিলাম।

 পরে পাঠশালার গুরুমহাশয়ের সঙ্গে একটা বন্দোবস্ত করিয়া লইলাম। রাত্রে যাইয়া তাঁহার নিকটে কিছু কিছু শিখিয়া আসিতাম—এই উপায়েই আমি অনেকটা শিখিয়া ফেলিলাম। আমি নৈশবিদ্যালয়ের উপকারিতা নিজ জীবনে যেরূপ উপলব্ধি করিয়াছি আর কেহ তাহা বোধ হয় করেন নাই। এইজন্য আমি আজকাল নৈশবিদ্যালয়-প্রতিষ্ঠার এত পক্ষপাতী। এই অভিজ্ঞতার সাহসেই আমি পরে হ্যাম্পটনে এবং টাস্কেজীতে নৈশবিদ্যালয় স্থাপন করিয়াছি।

 কিন্তু কেবলমাত্র নৈশবিদ্যালয়ের শিক্ষা পাইয়াই আমি কোন মতে স্থির থাকিতে পারিলাম না। আমি দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করিলাম—দিবাভাগের বিদ্যালয়ে ভর্ত্তি হইবই হইব। কান্নাকাটি করিতে করিতে অভিভাবকের অনুমতি পাইলাম। স্থির হইল যে, আমি খুব সকালে ঘুম হইতে উঠিয়াই নয়টা পর্য্যন্ত কলে কাজ করিব। পরে বিদ্যালয়ে যাইব এবং বিদ্যালয়ের ছুটির পরেই আরও দুই ঘণ্টা কলে কাজ করিব।