পাতা:নিগ্রোজাতির কর্ম্মবীর - বিনয়কুমার সরকার (১৯১৪).pdf/৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আমার বাল্য-জীবন
৩৩

 আমি হাঁপ ছাড়িয়া বাঁচিলাম। কিন্তু বড় কঠিন ব্যাপার। পাঠশালা নয়টার সময়েই বসে অথচ আমার বাড়ী হইতে ইহার দূরত্বও কম নয়। কাজেই নয়টা পর্য্যন্ত কলে কাজ করিয়া স্কুলে পৌঁছিতে রোজই আমার দেরী হইতে লাগিল। এ অসুবিধা এড়াইবার জন্য আমি একটা ফিকির করিলাম। আপনারা আমার দুষ্টামী দেখিয়া চটিবেন। কিন্তু কি করিব? সত্য কথা বলিতেছি। আমাকে বাধ্য হইয়াই অসত্যের পথ ধরিতে হইয়াছিল। কলের আফিসে একটা ঘড়ি ছিল। সেই ঘড়ি দেখিয়া সকলে কাজ-কর্ম্মের সময় ঠিক করিত। আমি রোজ সকালে যাইয়া সেই ঘড়ির কাঁটা সরাইয়া দিতাম। ঠিক ৮॥০ সময়ে ৯টা বাজিয়া যাইত। আমি কল ছাড়িয়া যথাসময়ে পাঠশালায় পৌঁছিতাম। পরে বড় সাহেব ব্যাপার বুঝিয়া অফিস ঘরে চাবি লাগাইয়া দিলেন। আমি আর ঘড়ির কাঁটা সরাইতে পারিতাম না।

 পাঠশালায় ত ভর্ত্তি হইলাম। হইয়াই বিপদ। সকল ছাত্রের মাথায়ই একটা করিয়া টুপি। কিন্তু আমার মাথায় কোন আবরণই ছিল না। মাথার টুপি দিবার প্রয়োজন আছে কি না তাহা অবশ্য আমি পূর্ব্বে কখনও চিন্তা করিতেই পারি নাই। পাঠশালায় যাইবামাত্রই আমার অভাব বুঝিতে পারিলাম। তখন আমাদের অঞ্চলে নূতন ফ্যাশনের এক টুপি উঠিয়াছে। ছেলে বুড়ো সকলেই সেই টুপি ব্যবহার করে। আমার মাতার অত পয়সা নাই। তিনি দুই টুকরা কাপড় দিয়া ঘরেই একটা টুপি শেলাই করিয়া দিলেন। আমি টুপি মাথায় দিলাম!