পাতা:নিগ্রোজাতির কর্ম্মবীর - বিনয়কুমার সরকার (১৯১৪).pdf/৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আমার বাল্য-জীবন
৩৭

করে। অতীতের স্মৃতি মানুষকে বর্ত্তমানে কর্ত্তব্য দেখাইয়া দেয়, ভবিষ্যতের জন্য দায়িত্ব শিখাইয়া দেয়। আর বাপ দাদার দোহাই অত্যধিক না দিলেই আত্মসম্মান-বোধ বজায় থাকে। পূর্ব্বকীর্ত্তি খানিকটা মনে রাখিয়া চলিলেই বিশেষ উপকার পাওয়া যায়। আজকাল আপনারা কথায় কথায় শ্বেতাঙ্গ বালকবালিকা এবং নিগ্রো বালকবালিকার চরিত্র তুলনা করিয়া আমাদিগকে অবনত সপ্রমাণ করিয়া থাকেন। আমরা অনেক বিষয়ে যে হীন সে বিষয়ে সন্দেহ নাই। কিন্তু একবার আপনারা কল্পনা করিয়া দেখিবেন যে আপনাদের কোন পিতামহ মাতামহ ইত্যাদি ছিল না, আপনাদের বংশকথা নাই, আপনাদের আত্মীয়-স্বজন, বন্ধুবান্ধব, বাস্তুভিটা ইত্যাদি কিছুই নাই। তাহা হইলে আমাদের নৈতিক চরিত্রের অবস্থা বুঝিতে পারিবেন।

 যাহাদের আত্মীয়-স্বজন কেহ নাই, তাহাদের কি চরিত্র গঠিত হইতে পারে? যাহাদের পারিবারিক বন্ধন কিছু নাই, তাহারা কি চক্ষুলজ্জার ভয় করে? তাহাদের সমাজই যে নাই! যাহারা পূর্ব্বপুরুষদের কথা ভাবিতে শিখে নাই, যাহারা বর্ত্তমানে রক্তের সম্পর্ক স্বীকার করে না, যাহাদের মামা খুড়ী দিদি শ্বশুর ইত্যাদি সম্পর্কবিশিষ্ট গুরুজন নাই, যাহাদের সন্তানসন্ততির জন্য মায়া বিকশিত হইতে পারে না, তাহারা কি মানুষের ধর্ম্ম, মানুষের বিবেক, মানুষের সদসদ্‌জ্ঞান, ইত্যাদি অর্জ্জন করিতে পারে? নিগ্রোজাতির এই অবস্থা। সমাজের বা আত্মীয়গণের মুখ চাহিয়া তাহাদিগকে কোন কাজ করিতে হয় না। কাহারও গৌরব নষ্ট