পাতা:নিগ্রোজাতির কর্ম্মবীর - বিনয়কুমার সরকার (১৯১৪).pdf/৪৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আমার বাল্য-জীবন
৩৯

তখন হইতে আমি আবার সেই নৈশ-বিদ্যালয়ের শিক্ষাকেই জীবনের সম্বল করিলাম। আমার বাল্য-জীবনের সকল শিক্ষাই আমি নৈশ-বিদ্যালয়ে লাভ করিয়াছি—এ কথা বলিলে কোন অত্যুক্তি হইবে না। দিবাভাগে আমি লিখিবার পড়িবার অবসর কিছুমাত্র পাই নাই বলিলেই চলে।

 অনেক সময়ে কার্য্য শেষ করিয়া নৈশশিক্ষার চেষ্টায় রত হইয়া দেখিতাম—শিক্ষক নাই। উপযুক্ত শিক্ষকের অভাবে আমাকে খুব ভুগিতে হইয়াছে। অনেক শিক্ষক এমন জুটিয়াছেন যাঁহাদের বিদ্যা প্রায় আমারই সমান! বহুকাল এরূপও কাটিয়াছে যখন রাত্রিকালে শিক্ষালাভের জন্য ৫।৬ মাইল দূরে হাঁটিয়া যাইতাম। আমার বাল্যজীবনে দৃঢ়প্রতিজ্ঞা ছিল—যেমন করিয়াই হউক আমি শিক্ষালাভ করিব। এই জন্য নৈরাশ্য আমাকে কখনও আক্রমণ করিতে পারে নাই।

 ওয়েষ্ট-ভার্জ্জিনিয়ায় বসতি করিবার সময়ে আমার মাতা একটি পিতৃমাতৃহীন অনাথ শিশুকে পোষ্যপুত্র গ্রহণ করিলেন। “নিজে শুতে ঠাঁই পায় না—শঙ্করাকে ডাকে!” আমাদের আর্থিক অবস্থা শোচনীয়—অথচ একজন নূতন লোক পরিবারে প্রবেশ করিল। আমরা তাহাকে ভাইএর ন্যায় গ্রহণ করিলাম। তাহার নাম দিলাম জেম্‌স্‌ বি ওয়াশিংটন।

 নুনের কলের কাজ ছাড়িয়া একটা কয়লার খনিতে কাজে নিযুক্ত হইলাম! এই খনি হইতে কলের কয়লা জোগান হইত। কয়লার খনিতে কাজ করিলে স্বাস্থ্য একেবারে নষ্ট হইয়া যায়।