পাতা:নিগ্রোজাতির কর্ম্মবীর - বিনয়কুমার সরকার (১৯১৪).pdf/৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আমার বাল্য-জীবন
৪১

বাধা দিবার কিছুই নাই—সংসারের সকল পদার্থ ই তাহাদিগকে বড় বড় কর্ম্মের দিকে উৎসাহিত করিতেছে। ভাবিতাম তাহারা অনন্ত প্রেম, অনন্ত কর্ম্ম, অনন্ত জ্ঞান লইয়া নাড়াচাড়া করিবার সুযোগ পায়। কোন বিষয়ে ক্ষুদ্রত্ব, পঙ্গুত্ব, নীচত্ব তাহাদিগের চিন্তা ও কর্ম্মরাশিকে স্পর্শ করিতে পারে না। বড় বড় কারবার লইয়াই তাহারা ব্যাপৃত। তাহারা চেষ্টা করিলে যুক্তরাজ্যের সভাপতি হইতে পারিতেছে—বড় বড় অনুষ্ঠানের প্রবর্ত্তক হইতেছে—বিশাল কর্ম্মকেন্দ্রের পরিচালক হইতেছে। তাহারা ধর্ম্মমন্দিরের গুরুর পদে অধিষ্ঠিত হইতে পারে, দেশশাসকের মর্য্যাদা পাইতে পারে। কেহই তাহাদিগের উদ্যম আকাঙ্ক্ষা ও আশার সম্মুখে একটা সীমা-রেখা টানিয়া দিয়া হৃদয় ভাঙ্গিয়া দিতে পারে না। আমি ভাবিতাম যদি আমার এই সকল সুযোগ থাকিত তাহা হইলে আমি সামান্য পল্লীর নগণ্য কুটিরে জন্মিয়াও ক্রমে ক্রমে সহরের নেতা, জেলার কর্ত্তা, প্রদেশের নায়ক, সাম্রাজ্যের শাসনকর্ত্তার পদে উন্নীত হইতাম। হায় আমি নিগ্রো—এই কল্পনা আমার পক্ষে উন্মত্তের প্রলাপ, মরুভূমির মরীচিকা।

 ও সব বাল্যজীবন ও যৌবনের মনোভাব। আজ কিন্তু সত্য বলিতেছি—আমার ওরূপ কল্পনা বা আকাঙ্ক্ষা হয় না। আমি শ্বেতাঙ্গ মানবের সঙ্গে ঠিক ঐরূপ তুলনা করিয়া নিজের অবস্থা বুঝিতে চেষ্টা করি না। আমি শ্বেতাঙ্গ মানবের সুযোগ সুবিধা সাহায্যগুলি আদৌ হিংসা করি না। আজ প্রৌঢ় অবস্থায়