পাতা:নিগ্রোজাতির কর্ম্মবীর - বিনয়কুমার সরকার (১৯১৪).pdf/৫০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪২
নিগ্রোজাতির কর্ম্মবীর

আমি অতীতের ঘটনাবলী পর্য্যবেক্ষণ করিয়া বুঝিতেছি, মান, মর্য্যাদা, কীর্ত্তি, প্রতিষ্ঠা ইত্যাদি মনুষ্যত্বের সত্য মাপকাঠি নয়। কোন লোক জগতে বিখ্যাত হইলেই সে কৃতকার্য্যতা লাভ করিল, আমি তাহা স্বীকার করি না, অথবা তাহার সাধনা সিদ্ধি প্রাপ্ত হইল—আমি এরূপ ভাবি না। আমি সফলতা অন্য প্রণালীতে মাপিতে শিখিয়াছি। আমি কৃতকার্য্যতার মূল্যস্বরূপ সাংসারিক যশোলাভ দেখিতে চাহি না। আমার মতে সেই ব্যক্তিই যথার্থ সফল যে অসংখ্য বাধা-বিপত্তি, বিঘ্ন-দুর্দ্দৈবের সঙ্গে সংগ্রাম করিয়াছে। কার্য্য উদ্ধার করিতে যাইয়া কোন ব্যক্তি যদি বিফল হয় তাহাতে আমি দুঃখিত হই না। তাহার প্রয়াস, তাহার সাধনা, তাহার দৃঢ়তা, তাহার কর্ত্তব্যনিষ্ঠা ইত্যাদির পরিচয় পাইলেই আমি তাহাকে কৃতকার্য্য, সফল ও সার্থকতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি বলিব। হয়ত সে জগতে যশস্বী হইল না—হয়ত তাহার নাম সর্ব্বত্র প্রচারিত হইল না—হয়ত ভবিষ্যসমাজে তাহার কোন স্মৃতি থাকিবে না। তথাপি সে কৃতকার্য্য, কারণ সে দুঃখের সঙ্গে লড়াই করিয়াছে, দারিদ্র্যের বোঝা মাথায় বহিয়াছে—নৈরাশ্যের ভীতিকেই জীবনের এমকাত্র সহায় করিয়া কঠোর কর্ম্মক্ষেত্রে অবতীর্ণ হইয়াছে।

 ইহাই আমার মতে মনুষ্যত্বের কষ্টিপাথর—সফলতার মাপকাঠি। এই দিক হইতে বিচার করিয়া দেখি নিগ্রোজাতির মধ্যে জন্মিয়া আমার উপকারই হইয়াছে। আমি প্রকৃত জীবন-সংগ্রাম দেখিয়াছি—যথার্থ জীবনের আস্বাদ পাইয়াছি। নিগ্রোজীবনের