(৭)
আমিন। (সাধুর প্রতি) তুই যাবি কোথা, তোরও যেতে হবে। দাদন লওয়া রেয়ের কর্ম্ম নয়। ঢ্যারা সইতে অনেক সইতে হয়। তুই লেখা পড়া জানিস্ তোকে খাতায় দস্তখৎ করে দিয়ে আস্তে হবে।
সাধু। আমিন মহাশয়! একে কি নীলের দাদন বলো, নীলের গাদন বল্যে ভাল হয় না? হা পোড়া অদৃষ্ট, তুমি আমার সঙ্গে আছ, যার ভয়ে পাল্য়ে এলাম, সেই ঘায় আবার পড়্লাম। পত্তনির আগে এতো রামরাজ্য ছিল, তা হাবাতেও ফকির হলো দেশেও মন্বন্তর হলো।
আমিন। (ক্ষেত্রমণির প্রতি দৃষ্টিপাত করে স্বগত) এ ছুঁড়িতো মন্দ নয়। ছোট সাহেব এমন মাল পেলে তো লুপে নেবে—আপনার বুন দিয়ে বড় পেস্কারি পেলাম, মালটা ভাল,—দেখা যাক্।
রেবতী। ক্ষেত্র, মা তুই ঘরের মধ্যে যা।
আমিন। চল্ সাধু, এই বেলা মানে মানে কুটি চল।
রেবতী। ও যে এট্টু জল খ্যাতি চেয়েলো, ও আমিন মশাই তোকার কি মাগ ছেলে, নাই, কেবল লাঙ্গল রেখেচে আর এই মারপিট। ওমা ও যে ডবকা ছেলে, ও যে এতক্ষণ দুবার খায়, না খেয়ে সাহেবের কুটি যাবে কেমন করে, সে অনেক দূর। দোহাই সাহেবের, ওরে চাডি্ড খেইয়ে নিয়ে যাও—আহা, আহা, মাগ ছেলের জন্যেই কাতর, এখনো চকি ছল পড়্চে, মুখ শুইকে গেছে—কি কর্বো, কি পোড়া দেশে এলাম, ধনে প্রাণে গ্যালাম, হায়, হায়, হায়, ধনে প্রাণে গ্যালাম (ক্রন্দন)।