পাতা:পত্রাবলী (১৯১২-১৯৩২) - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/১৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 কোনও কোনও দার্শনিক মনে করেন যে, আমাদের এই ক্ষুদ্র গ্রহটি মানুষের আনন্দোপভোগের জন্যই সৃষ্ট হইয়াছে। এ বিষয়ে আমি নিঃসন্দেহ যে, পৃথিবীর আর সকল দেশ অপেক্ষা বর্মা দেশেই তাঁহারা তাঁহাদের অনুগামীদের অধিক সংখ্যায় দেখিতে পাইবেন। যদি এই জগৎ—বিশেষতঃ প্রাণিজগৎ মানুষের জন্যই সৃষ্ট হইয়া থাকে তাহা হইলে অখাদ্য বলিয়া কিছু এখানে থাকিতে পারে না; এবং আপনি জানিয়া আশ্চর্য্যান্বিত হইবেন যে, বর্মী বিধানে অখাদ্য মাংস বলিয়া কিছু নাই। কাক, বিড়াল, কুকুর—এমন কি সাপ পর্য্যন্ত সাদরে রান্নাঘরে গৃহীত হইয়া থাকে এবং ঐ সকল প্রাণী মানুষের পেটে নিরাপদ আশ্রয় লাভ করে। এদেশে খাদ্যের ব্যাপারে কোনও পক্ষপাতিত্ব চলে না; এমন কি কীটপতঙ্গাদিও বলিতে পারে না যে এ ব্যাপারে তাহারা উপেক্ষিত।

 এখানকার জলহাওয়া আমাকে ক্রমেই যেন দুর্ব্বল করিয়া ফেলিতেছে। গাঁটে গাঁটে খিল ধরিয়া যাওয়াটা একটা সাধারণ ব্যাপার হইয়া দাঁড়াইয়াছে। যে বর্মীরা অনেক বিষয়েই একটী আশ্চর্য্য সভ্যতা গড়িয়া তুলিয়াছে, তাহারা এই রোগের প্রতিকারের জন্য ম্যাসাজ্ও আবিষ্কার করিয়াছে যাহা আশ্চর্য্য ফলদায়ক।

 ভয় হইতেছে বোধহয় আমার পত্র দীর্ঘ হইয়া যাইতেছে; অতএব আজ এখানেই শেষ করি।

 * * *

ইতি— 

আপনার স্নেহের 
সুভাষ 

(এস. সি. বোস) 

(ইংরাজী হইতে অনূদিত)

১২৭