পাতা:পত্রাবলী (১৯১২-১৯৩২) - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/২১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

বৃদ্ধি পাইবে। (৩) কর্পোরেশনের উৎসাহ ও সর্ব্ববিধ আনুকূল্য লাভ করিয়া তাঁহারা যে সকল প্রতিষ্ঠান তাঁহাদের কলেজের সহিত মিশিয়া গিয়া যামিনী এণ্ড কোম্পানীর কর্ত্তৃত্ব স্বীকার করিয়া না লইবে ঐগুলিকে একেবারে নিশ্চিহ্ন করিয়া দিবে। ইহা হইতেই স্পষ্ট প্রতীয়মান হয় যে, যদি কর্পোরেশন নূতন কোনও প্রতিষ্ঠান গড়িয়া তুলিতে চায় তাহা হইলে ঐ জাতীয় অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে প্রদত্ত সাহায্য বন্ধ করিয়া দিতে হইবে; তাহার ফলে এই প্রতিষ্ঠানগুলি ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হইবে।


 প্রকৃতপক্ষে যামিনী এণ্ড কোম্পানীর দ্বারাই এই একত্রীকরণের প্রস্তাব আনীত হইয়াছে; যাহার উদ্দেশ্য অন্যান্য সকল প্রতিষ্ঠানকে নিশ্চিহ্ন করা ও একটি নূতন কলেজ প্রতিষ্ঠা করিয়া ক্ষমতা ও আধিপত্য বিস্তার করা। এবং এই লোকগুলিই অসহযোগ আন্দোলনের শুরুতে দেশবন্ধুর আহ্বানে সাড়া দিতে অস্বীকৃতি জানাইয়াছিলেন।

 বৈদ্যশাস্ত্রপীঠ দেশবন্ধুর দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয় এবং আমার মনে হয়, সংগঠনমূলক কাজের নিদর্শন হিসাবে ইহার মূল্য ও কার্য্যকারিতা অনেকখানি। এই কলেজের অধ্যক্ষ কবিরাজদিগের মধ্যে একজন পণ্ডিত ব্যক্তি। নোংরা ব্যবসাবুদ্ধি তাঁহার নাই এবং পসারের জন্য ভাড়াটিয়া লোকদের মুখাপেক্ষী হইয়াও তাঁহাকে থাকিতে হয় না। তিনি একজন ‘খাঁটি’ কবিরাজ এবং প্রাচীন রীতির চিকিৎসায় পারদর্শী; তবে আধুনিক চিন্তাধারা সম্বন্ধেও তিনি কম সচেতন নন। ভবিষ্যতের কবিরাজদিগের জন্য তাঁহার মত একজন সরল, ধার্ম্মিক ও নির্ম্মল চরিত্রের শিক্ষক অপেক্ষা আর কোনও ভাল শিক্ষকের কথা আমি চিন্তাও করিতে পারি না। তবে আত্মপ্রচার ও খোসামোদের ধার ধারেন না বলিয়াই যামিনী এণ্ড কোম্পানীর বেশ কিছুটা সুবিধা হইয়া গিয়াছে।

১৮৯