পাতা:পত্রাবলী (১৯১২-১৯৩২) - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/২৪৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

খরচ লাগে না এবং ব্যায়াম করবার জন্য জায়গা খুব কমই লাগে। (২) ব্যায়াম করিলে অতিরিক্ত পরিশ্রম হয় না এবং অতিরিক্ত পরিশ্রমের ফলে কোনও বিপদের আশঙ্কা নাই। (৩) শুধু অঙ্গবিশেষের পরিচালনা না হয়ে সমস্ত শরীরের মাংসপেশীর চালনা হয়। (৪) পরিপাক-শক্তি বৃদ্ধি হয়।

 আমার মনে হয় যে, আমাদের দেশে— বিশেষতঃ ছাত্রসমাজে—যদি মুলারের ব্যায়ামের বহুল প্রচলন হয় তা হইলে খুব উপকার হবে।

 মানুষের দৈনন্দিন কাজ করেই সন্তুষ্ট বোধ করলে চলবে না। এই সব কাজকর্ম্মের যে উদ্দেশ্য বা আদর্শ অর্থাৎ আত্মবিকাশ সাধন— সে কথা ভুললে চলবে না। কাজটাই চরম উদ্দেশ্য নয়; কাজের ভিতর দিয়ে চরিত্র ফুটিয়ে তুলতে হবে এবং জীবনের সর্ব্বাঙ্গীণ বিকাশ সাধন করতে হবে। মানুষকে অবশ্য নিজের ব্যক্তিত্ব ও প্রবৃত্তি অনুসারে একদিকে বৈশিষ্ট্য লাভ করতে হবে; কিন্তু এই বৈশিষ্ট্যের মূলে (specialization) একটা সর্ব্বাঙ্গীণ বিকাশ চাই। যে ব্যক্তির সর্ব্বাঙ্গীণ উন্নতি হয় নাই সে অন্তরে কখনও সুখী হতে পারে না; তার মনের মধ্যে সর্ব্বদা একটা শূন্যতা বা অভাব-বোধ শেষ পর্য্যন্ত রয়ে যায়। এই সর্ব্বাঙ্গীণ বিকাশের জন্য চাই:—(১) ব্যায়াম-চর্চ্চা (২) নিয়মিত পাঠ (৩) দৈনিক চিন্তা বা ধ্যান। কাজের চাপে মধ্যে মধ্যে এসব দিকে দৃষ্টি থাকে না বা দৃষ্টি থাকলেও সময় হয়ে ওঠে না। কিন্তু কাজের চাপ কমলেই আবার এই সব দিকে দৃষ্টি দেওয়া দরকার। দৈনিক কাজকর্ম্ম করে নিশ্চিন্ত হলে চলবে না; তার মধ্যে ব্যায়ামের সময় এবং লেখাপড়া ও ধ্যান-ধারণারও সময় করে নিতে হবে। এই তিনটি অতি প্রয়োজনীয় কাজের জন্য মানুষ যদি অন্ততঃপক্ষে প্রতিদিন দেড় ঘণ্টা বা দু’ ঘণ্টা সময় দিতে পারে, তা হলে খুব উপকার হবে। মুলার বলেন যে, যদি কোনও ব্যক্তি নিয়মিতভাবে

২২০