তাহাতে লেশমাত্র সন্দেহ নাই। কিন্তু সে নিজে স্বীকার করে না,—হাসিয়া উড়াইয়া দেয়। রোগে রূপ নষ্ট করে—সে যাক্। কিন্তু, সে অভিমান নাই, সে রাগ নাই—সে জিদ নাই। ম্লান চোখ-দুটি যেন ব্যথায় ও করুণায় ভরা। একটু লক্ষ্য করিলে মনে হয়, যেন ঐ দুটি সজল আবরণের নীচে রোদনের সমুদ্র চাপা দেওয়া আছে—মুক্তি পাইলে বিশ্বসংসার ভাসাইয়া দিতে পারে। চণ্ডীমণ্ডপের ভিতরের দ্বার দিয়া রমা প্রতিমার পার্শ্বে আসিয়া দাঁড়াইল। তাহাকে দেখিবামাত্র শুভানুধ্যায়ীর দল একেবারে তার-স্বরে ছোটলোকদের চোদ্দপুরুষের নাম ধরিয়া গালিগালাজ করিতে লাগিল। রমা শুনিয়া নিঃশব্দে একটুখানি হাসিল। বোঁটা হইতে টানিয়া ছিঁড়িলে মানুষের হাতের মধ্যে ফুল যেমন করিয়া হাসে—ঠিক তেম্নি। তাহাতে রাগ-দ্বেষ, আশা-নিরাশা, ভাল-মন্দ কিছুই প্রকাশ পাইল না। সে হাসি সার্থক কি নিরর্থক, তাহাই বা কে জানে!
বেণী রাগিয়া কহিল,—“না না, এ হাসির কথা নয়, এ বড় সর্ব্বনেশে কথা। একবার যখন জান্ব, এর মূলে কে?” বলিয়া দুই হাতের নোখ এক করিয়া কহিল,—“তখন এই এম্নি ক’রে ছিঁড়ে ফেল্ব।” রমা মনে মনে শিহরিয়া উঠিল। বেণী কহিতে লাগিল,—“হারামজাদা ব্যাটারা, এ বুঝিস্নে যে, যার জোরে তোরা জোর করিস্ সেই রমেশ নিজে যে জেলে ঘানি টান্চে! তোদের মার্তে কতটুকু সময় লাগে?” রমা কোন