পাতা:পল্লী-সমাজ.djvu/৫০

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
পল্লী-সমাজ
৪৮

যাহারা তাহার এই ব্যবহার লক্ষ্য করিল, তাহারা সকলেই মনে মনে বুঝিল, গোবিন্দ সহজে কাহাকেও নিষ্কৃতি দিবে না। অতঃপর আর কোন গোলযোগ ঘটিল না। ব্রাহ্মণেরা যাহা ভোজন করিলেন, তাহা চোখে না দেখিলে প্রত্যয় করা শক্ত; এবং প্রত্যেকেই খুদি, পটল, ন্যাড়া, বুড়ী প্রভৃতি বাটীর অনুপস্থিত বালক–বালিকার নাম করিয়া যাহা বাঁধিয়া লইলেন, তাহাও যৎকিঞ্চিৎ নহে। সন্ধ্যার পর কাজকর্ম্ম প্রায় সারা হইয়া গেছে, রমেশ সদর-দরজার বাহিরে একটা পেয়ারাগাছের তলায় অন্যমনস্কের মত দাঁড়াইয়াছিল, মনটা তাহার ভাল ছিল না। দেখিল দীনু ভট্টাচার্য্য ছেলেদের লইয়া, লুচি-মণ্ডার গুরুভারে ঝুঁকিয়া পড়িয়া, একরূপ অলক্ষ্যে বাহির হইয়া যাইতেছে। সর্ব্বপ্রথমে খেঁদির নজর পড়ায় সে অপরাধীর মত থতমত খাইয়া দাঁড়াইয়া পড়িয়া শুষ্ককণ্ঠে কহিল,“বাবা, বাবু দাঁড়িয়ে—” সবাই যেন একটু জড়সড় হইয়া পড়িল। ছোট মেয়েটির এই একটি কথা হইতেই রমেশ সমস্ত ইতিহাসটা বুঝিতে পারিল; পলাইবার পথ থাকিলে সে নিজেই পলাইত। কিন্তু সে উপায় ছিল না বলিয়া, আগাইয়া আসিয়া সহাস্যে কহিল, “খেঁদি, এ সব কার জন্যে নিয়ে যাচ্ছিস্‌ রে?” তাহাদের ছোট বড় পুঁটুলিগুলির ঠিক সদুত্তর খেঁদি দিতে পারিবে না আশঙ্কা করিয়া দীনু নিজেই একটুখানি শুষ্কভাবে হাসিয়া বলিলেন, “পাড়ার ছোটলোকদের ছেলেপিলেরা আছে ত বাবা, এঁটোকাঁটাগুলো নিয়ে গেলে তাদের দু’খানা