পাতা:পল্লী-সমাজ.djvu/৫৭

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৫৫
পল্লী-সমাজ


হইয়া গেছে, তখন বাঁড়ুয্যে উঠিয়া আসিয়া মধুর তেলের ভাঁড়ের ভিতর উখড়ি ডুবাইয়া একছটাকে তেল বাঁ হাতের তেলোয় লইয়া অর্দ্ধেকটা দুই নাক ও দুই কানের গর্ত্তে ঢালিয়া দিয়া, বাকীটা মাথায় মাখিয়া ফেলিলেন ও কহিলেন, “বেলা হয়ে গেল, অম্‌নি ডুবটা দিয়ে একেবারে ঘরে যাই! এক পরসার নুন দে দেখি, মধু, পয়সাটা বিকেলবেলা দিয়ে যাবো।” “আবার বিকেলবেলা!”বলিয়া মধু অপ্রসন্নমুখে নুণ দিতে তাঁহার দোকানে উঠিল। বাঁড়ুয্যে গলা বাড়াইয়া দেখিয়া, বিস্ময়-বিরক্তির স্বরে কহিয়া উঠিল, “তোরা সব হলি কি, মধু? এ যে গালে চড় মেরে পয়সা নিস্‌, দেখি?” বলিয়া আগাইয়া আসিয়া নিজেই এক খামচা নুন তুলিয়া ঠোঙায় দিয়া সেটা টানিয়া লইলেন। গাড়ু হাতে করিয়া রমেশের প্রতি চাহিয়া মৃদু হাসিয়া বলিলেন,—“ঐ ত একই পথ—চল না বাবাজী, গল্প ক’রতে ক’রতে যাই।” “চলুন”—বলিয়া রমেশ উঠিয়া দাঁড়াইল। মধু-দোকানি অনতিদূরে দাঁড়াইয়া করুণ-কণ্ঠে কহিল, “বাড়ুয্যে মশাই, সেই ময়দার পয়সা পাঁচ আনা কি অমনি—”

 বাঁড়ুয্যে রাগিয়া উঠিল—“হাঁ রে, মধু, দুবেলা চোখো-চোখি হবে-তোদের কি চোখের চামড়া পর্য্যন্ত নেই? পাঁচ ব্যাটাবেটীর মতলবে কল্‌কাতায় যাওয়া আসা ক’রতে পাঁচপাঁচটা টাকা আমার জলে গেল—আর এই তোদের তাগাদা করবার সময় হ’ল! কারো সর্ব্বনাশ, কারো পোষ