পাতা:পল্লী-সমাজ.djvu/৭৫

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৭৩
পল্লী-সমাজ


ভয়ে চার পা পিছাইয়া দাঁড়াইল। আধমিনিট পর্য্যন্ত কোথাও একটু শব্দ নাই; তখন বেণী সাহস করিলেন। যেখানে ছিলেন, সেইখান হইতে বলিলেন, “কিসের ভাগ?” ভজুয়া তৎক্ষণাৎ তাঁহাকে একটা সেলাম দিয়া সসম্ভ্রমে কহিল, “বাবুজী, আপকো নাহি পুছা।” মাসী অনেক দূরে রকের উপর হইতে তীক্ষ্ণকণ্ঠে ঝন্‌ঝন্ করিয়া বলিলেন, “কি রে বাপু, মারবি না কি?” ভজুয়া একমুহূর্ত্ত তাহার প্রতি চাহিয়া রহিল; পরক্ষণেই তাহার ভাঙা গলার ভয়ঙ্কর হাসিতে বাড়ী ভরিয়া উঠিল। খানিক পরে হাসি থামাইয়া যেন একটু লজ্জিত হইয়াই পুনরায় রমার প্রতি চাহিয়া কহিল, ‘মা-জী?’ তাহার কথায় এবং ব্যবহারে অতিশয় সম্ভ্রমের ভিতরে যেন অবজ্ঞা লুকান ছিল। রমা ইহাই কল্পনা করিয়া মনে মনে বিরক্ত হইয়া উঠিয়াছিল। এবার কথা কহিল। বলিল, “কি চায় তোর বাবু?” রমার বিরক্তি লক্ষ্য করিয়া ভজুয়া হঠাৎ যেন কুণ্ঠিত হইয়া পড়িল। তাই যতদূর সাধ্য, সেই কর্ক্কশকণ্ঠ কোমল করিয়া তাহার প্রার্থনার পুনরাবৃত্তি করিল। কিন্তু করিলে কি হয়—মাছ ভাগ হইয়া যে বিলি হইয়া গিয়াছে। এতগুলা লোকের সুমুখে সে হীন হইতেও পারে না।—তাই কটুকণ্ঠে কহিল—“তোর বাবুর এতে কোন অংশ নেই। বল্‌ গে যা, যা’ পারে, তাই করুক্‌ গে।” “বহুৎ আচ্ছা, মা-জী।” বলিয়া ভজুয়া তৎক্ষণাৎ একটা দীর্ঘ সেলাম করিয়া বেণীর ভৃত্যকে হাত নাড়িয়া যাইতে ইঙ্গিত করিয়া দিল, এবং দ্বিতীয় কথা না কহিয়া নিজেও প্রস্থা-