এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পালামৌ
২৩


পাইলাম না। কিয়ৎ পরেই “কুমারীর” ডাল হইতে সেই শ্লোক আবার উচ্চারিত হইল, কিন্তু তখন শ্লোকের স্পষ্টতা আর পূর্ব্বমত বোধ হইল না, কেবল সুর আর ছন্দ শুনা গেল। “কুমারীর” মূলে আসিয়া দেখি, হরিয়াল ঘুঘুর ন্যায় একটি পক্ষী আর একটির নিকট মাথা নাড়িয়া এই ছন্দে আস্ফালন করিতে করিতে অগ্রসর হইতেছে, পক্ষিণী তাহাকে ডানা মারিয়া সরিয়া যাইতেছে, কখন কখন অন্য ডালে গিয়া বসিতেছে। এবার আমার ভ্রান্তি দূর হইল, আমি মন্দাক্রান্তাচ্ছন্দের একটিমাত্র শ্লোক জানিতাম; ছন্দটি উচ্চারণ মাত্রেই শ্লোকটি আমার মনে আসিয়াছিল, সঙ্গে সঙ্গে কর্ণেও তাহার কার্য্য হইয়াছিল; আমি তাহাই শুনিয়াছিলাম “রাধে মন্যুং।” কিন্তু পক্ষী বর্ণ উচ্চারণ করে নাই, কেবল ছন্দ উচ্চারণ করিয়াছিল। তাহা যাহাই হউক, আমি অবাক্‌ হইয়া পক্ষীর মুখে সংস্কৃত ছন্দ শুনিতে লাগিলাম। প্রথমে মনে হইল, যিনি ‘উদ্ধবদূত’ লিখিয়াছেন, তিনি হয়ত এই জাতি পক্ষীর নিকট ছন্দদ পাইয়াছিলেন। শ্লোকটির সঙ্গে এই “কুঞ্জকীরানুবাদের” বড় সুসঙ্গতি হইয়াছে। শ্লোকটি এই—

রাধে মন্যুং পরিহর হরিঃ পাদমূলে তবায়ং৷

জাতং দৈবাদসমৃশমিদং বারমেকং ক্ষমস্ব॥

এতানাকর্ণয়সি নয়বন্ কুঞ্জকীরানুবাদান৷

এভিঃ ক্রুরৈর্বয়মবিরতং বঞ্চিতাঃ বঞ্চিতাঃ স্মঃ॥

 উদ্ধব মথুরা হইতে বৃন্দাবনে আসিয়া রাধার কুঞ্জে উপস্থিত হইলে গোপীগণ আপনাদের দুঃখের কথা তাঁহার নিকট বলিতেছেন, এমত সময়ে কুঞ্জের একটা পক্ষী বৃক্ষশাখা হইতে বলিয়া উঠিল, “রাধে আর রাগ করিও না। চেয়ে দেখ, স্বয়ং হরি তোমার পদতলে। দৈবাৎ যাহা হইয়া গিয়াছে, একবার তাহা ক্ষমা কর।” গোপীরা এত বার