পাতা:পাষাণের কথা.djvu/১৬৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পাষাণের কথা

ধবলশিলামণ্ডিত নর্ম্মদার উচ্চ তীরের পার্শ্বে থাকিয়া বাতাপিনগরের সেনা ঘট্ট রক্ষা করিতেছিল। সামান্য সেনা লইয়া চালুক্য সেনাপতি সীমান্ত রক্ষা করিতেছিলেন। কিন্তু বর্ষাজলপ্লাবিত নর্ম্মদা শিলাসঙ্কুল উপকূলের জন্য উত্তরাপথের সেনাধ্যক্ষগণের নিকট দুস্তর হইয়া উঠিয়াছিল।

 তীর্থযাত্রার ছলে প্রচ্ছন্নভাবে দক্ষিণাপথবিজয়যাত্রায় নির্গত হইয়া হর্ষবর্দ্ধন তীর্থের কথা বিস্মৃত হয়েন নাই। আটবিক কোশলে আসিয়া সম্রাট মঠ ও স্তূপ দর্শনের অভিপ্রায় জানাইয়া মঠস্বামীর নিকট দূত প্রেরণ করিয়াছিলেন। যথাসময়ে হর্ষবর্দ্ধন আত্মীয় স্বজন ও প্রধান প্রধান সেনাধ্যক্ষগণ সমভিব্যাহারে মঠদর্শনে আসিলেন। মঠস্বামী সম্রাটের অভ্যর্থনার জন্য যথাসাধ্য আয়োজন করিয়াছিলেন। সম্রাট কিয়ৎক্ষণের জন্য স্তূপের ধ্বংসাবশেষমধ্যে আসিয়া ইতস্ততঃ পরিভ্রমণ করিয়াছিলেন ও একবার মহাদেব আকারধারী আমার নিকট মস্তক অবনত করিয়াছিলেন। সম্রাট সত্বর তীর্থযাত্রা সমাপন করিয়া নর্ম্মদাতীরে প্রত্যাবর্তন করিলে সকলেই বুঝতে পারিয়াছিল যে, তিনি ভক্তিপ্রণোদিত হইয়া স্তূপে আইসেন নাই।

 বর্ষা অতীত হইলে হর্ষবর্দ্ধনের সেনা নানাস্থানে নর্ম্মদা পার হইবার চেষ্টা করিল, কিন্তু সর্ব্বত্র পাষাণের অন্তরালে থাকিয়া চালুক্য সেনা তাহাদিগের গতিরোধ করিল। নৌকা বা নৌসেতু কোনও উপায়ে যখন নর্ম্মদার দক্ষিণ কূল অধিকৃত হইল না, তখন হর্ষবর্দ্ধন নানাস্থান হইতে সৈন্য একত্র করিয়া স্বয়ং সৈন্যচালনায় প্রবৃত্ত হইলেন। দাক্ষিণাত্য অভিযানের ফল তোমাদিগের ইতিহাসে বর্ণিত হইয়াছে। ষে চরণযুগল আর্য্যাবর্ত্তের অশেষ রাজমণ্ডলীর মুকুটমণির প্রভায় আলোকিত হইয়াছিল, তাহা কখনও নর্ম্মদার দক্ষিণতীর স্পর্শ করে নাই। বার বার পরাজিত হইয়া হর্ষবর্দ্ধন

১৫৫