পাতা:পৃথিবীর ইতিহাস - অষ্টম খণ্ড (দুর্গাদাস লাহিড়ী).pdf/৩২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

NoS8 ভারতবর্ষ । খৃষ্টীয় দশম শতাব্দীর শেষভাগে রাণী দিদাদেবীর হস্তে রাজ্যভার নিপতিত হয়। রাণী একেবারে হিতাহিতবিবেচনাশূন্য ছিলেন। তিনি প্রথমে নাবালক রাজার অভিভাবিক হন, পরে স্বয়ং রাণীর ন্যায় রাজ-কাৰ্য্য পরিচালন করেন। র্তাহার ভ্রাতুষ্পপুত্ৰ সংগ্ৰাম, খৃষ্টীয় ১ ০০৩ অব্দে রাজা হন। তঁহার সময় গজনীর সুলতান মামুদ কাশ্মীর রাজ্য আক্রমণ করে। যদিও সংগ্রামে সৈন্যগণ পরাজিত হইয়াছিল, তথাপি পাৰ্বত্য প্রদেশের দুৰ্গমতার জন্য সুলতান মামুদ একেবারে কাশ্মীরের স্বাধীনতা হরণ করিতে পারেন নাই । একাদশ শতাব্দীর মধ্যভাগে, কাশ্মীরের দুর্দশার একশেষ হয়। কলস ও হর্ষের রাজত্বকালে দেশের রাজ-শক্তি অত্যন্ত দুর্বল হইয়া পড়ে এবং প্ৰজাগণ নিরতিশয় উৎপীড়ন ভোগ করে। ১৩৩৯ খৃষ্টাব্দে স্থানীয় এক মুসলমান-বংশ রাজ-ক্ষমতা লাভ কবে এবং চতুৰ্দশ শতাব্দীতে রাজ্যের সর্বত্রই মুসলমান-প্ৰাধান্য স্থাপিত হয়। সৰ্ব্বশেষে ১৫৮৭ খৃষ্টাব্দে মোগল বাদসহ আকবর কাশ্মীর রাজ্য জয় করিয়া মোগল সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করিয়া লন । 米 一K ক্যান্যকুব্জ, পাঞ্চাল প্রভৃতি । কান্যকুব্জ অতি প্ৰাচীন রাজ্য। মহাভারতের অনেক স্থলে ইহার উল্লেখ আছে। খৃষ্টপুৰ্ব্ব দুই শত বৎসর পূর্বে পতঞ্জলির পাণিনি-ব্যাকরণের টীকা মহাভায্যে এই দেশের নামোল্লেখ করা হইয়াছে। এই রাজ্য এরূপভাবে ধ্বংস প্রাপ্ত হইয়াছে যে, বৰ্ত্তমানে কেবল ভগ্ন ভূপ ভিন্ন পুৰ্ব্ব-গৌরবের ও অট্টালিকাদির কোনও চিহ্ন বৰ্ত্তমান নাই । ৪০৫ খৃষ্টাব্দে দ্বিতীয় চন্দ্ৰ-গুপ্ত ( বিক্ৰমাদিত্যের ) রাজ্য-কালে, চীন পরিব্রাজক ফা-হিয়ান যখন কান্যকুব্জ পরিদর্শন করেন, তখন হইতেই কান্তকুঞ্জের প্রকৃত ইতিহাস আরম্ভ হয়। ফা-হিয়ান তাহার। ভ্ৰমণ-বৃত্তান্তে ক্যান্যকুব্জ সম্বন্ধে অনেক কথা লিপিবদ্ধ করিয়া গিয়াছেন। চীন-পরিব্রাজকের ভ্রমণ-বৃত্তান্তে দেখিতে পাওয়া যায়,-পঞ্চম শতাব্দীর প্রথম ভাগে নগরে মাত্ৰ দুইটী বৌদ্ধমন্দির ছিল। বোধ হয়, এই দুইটী মন্দির গুপ্ত-বংশের রাজত্ব-কালে নিৰ্ম্মিত হইয়াছিল । কান্তকুন্ডের সর্বাঙ্গীণ উন্নতি হয়-হৰ্ষবৰ্দ্ধনের রাজত্ব-কালে। হৰ্ষবৰ্দ্ধন কান্যকুব্জকে তঁাহার রাজধানীতে পরিবৰ্ত্তিত করেন। ৬৩৬ খৃষ্টাব্দে ও ৬৪৩ খৃষ্টাব্দে যখন হিউয়েনাৎ-সাং কান্তকুন্ডেজ অবস্থান করিতেছিলেন, সে সময়ে ফাহিয়ান বর্ণিত অবস্থার অনেক পরিবর্তন হইয়াছে । হিউয়েনৎ-সাং দুইটী বৌদ্ধ-মঠের পরিবর্তে দুই শতেরও অধিক মঠ দেখিয়াছিলেন । বৌদ্ধধৰ্ম্মের সঙ্গে সঙ্গে হিন্দুরান্মেরও উন্নতি চলিতেছিল। কান্যকুজে হিন্দুদেরও অনেক মন্দির বর্তমান। রাজধানী সুরক্ষিত-গঙ্গার পূর্ব উপকূলে চার মাইল প্রশস্ত ছিল। রাজধানী নানাবিধ মারম্য অট্টালিকায় ও রম্যোদ্যানে অলঙ্কত হহয়ছিল । নগরবাসী সমৃদ্ধিশালী ছিল। ৬৪৭ খৃষ্টাব্দে হৰ্ষবৰ্দ্ধনের মৃত্যুর পর তঁহার বিশাল রাজ্যমধ্যে বিশৃঙ্খলা ও বিপ্লব উপস্থিত হইয়াছিল । তৎপর যশোবন্মা অষ্টম শতাব্দীতে কান্যকুক্সের রাজ্যভার প্রাপ্ত হন।