পাতা:পৃথিবীর ইতিহাস - অষ্টম খণ্ড (দুর্গাদাস লাহিড়ী).pdf/৩৬৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૭૭૨ ভারতবর্ঘ । যে প্রাকৃতিক পন্ধিবৰ্ত্তন নিত্য-প্ৰত্যক্ষীভূত, উত্থান-পতন গৌরব-পদািখলনের যে বিয়াট অভিনয় নিত্য সংসাধিত হয়,-অনন্ত শক্তির সে অনন্ত মহিমা সীমাবদ্ধ জ্ঞানে মানুষ আত্মত্ত করিতে পারে না,-অনন্ত জ্ঞানের গুঢ় উদ্দেশ্য সীমাবদ্ধ জ্ঞানে মানুষ বুঝিতে সমর্থ হয় না - তাই মানুষ তাহার জ্ঞানবুদ্ধির উপযোগী কারণ নির্দেশ করিয়া লয়। বাক্ষ্যমাণ প্রসঙ্গের বিশ্লেষণেও সেই সীমাবদ্ধ জ্ঞানে অনন্তের অনন্ত জ্ঞান আয়ত্ত করিবার প্রয়াস দেখিতে পাই। কি কারণে ভারতের এই পদস্থলন হইয়াছিল ;-কি গুঢ় উদ্দেশ্য সাধন জন্য হিন্দু-ভারত বৈদেশিক বিধৰ্ম্মীর পদানত হইল,-মঙ্গলময়ের সে মঙ্গলোচ্ছা বুঝিতে সমর্থ হই না বুলিয়াই, মানুষিক জ্ঞানে একটা কারণ-নির্দেশের প্রয়াস পাই। আর সেই প্ৰচেষ্টার ফলে যে চিত্র অঙ্কিত হয়, নিয়ে তাহাই প্ৰকটনের প্রয়াস পাইতেছি। পুর্বেই বলিয়াছি,-প্ৰাকৃতিক সংস্থানে ভৌগোলিক অবস্থানে ভারত স্মরণাতীত কাল হইতে বিভিন্ন খণ্ড-রাজ্যে বিভক্ত হইয়া আছে। স্ব স্ব প্রাধান্য অক্ষুন্ন রাখিতে, পরন্তু একটী অপরটিকে অধীনতা-পাশে আবদ্ধ করিতে, প্ৰত্যেকেই প্ৰযত্নপর রহিয়াছে। তাহারই ফলে, বিদ্বেষ-বহির গগনম্পৰ্শী জ্বালামালা নিরস্তর ভারতকে বিদগ্ধ করিতেছিল। কেন্দ্রীভূত রাজশক্তির অসদ্ভাব নিবন্ধন, খণ্ডরাজ্য-সমুহে বিদ্রোহানল সৰ্ব্বদা প্ৰজ্বলিত থাকিত ; স্বাথানুসন্ধায়ী দুষ্টপ্রকৃতি সে অনলে ইন্ধন প্ৰক্ষেপে সদা উন্মুখ ছিল। পরস্পরের দ্বন্দ্ব-কলহে জাতীয় শক্তি হীনবল হইয়া পড়িয়াছিল। . ভারতের এই গৃহবিবাদ-সুত্রই বৈদেশিকের ভারত অধিকারের পথ প্রশস্ত করিয়া দেয়। ক্ষুদ্র স্বাৰ্থ লহিয়াই ভারত তখন নিতান্ত ব্যাকুল । ব্যষ্টির স্বার্থে তখন সমষ্টি উপেক্ষিত। অধিকন্তু গণ্ডীর বহির্ভাগে, সীমানার অন্তরালে অবস্থিত বৈদেশিক রাজ্যের রাজনীতির অনভিজ্ঞতা নিবন্ধন ভারত তখন ব্যষ্টিগত স্বার্থসাধনেতাহারই উন্নতি-পরিপুষ্টতে যত্নবান হইয়াছিল। সমষ্টি উপেক্ষিত হওয়ায়, শক্তির অনুন্মেষে। ভারত সহজেই শ্রেষ্ঠ-শক্তির আয়ত্তাধীন হহয়া পড়িয়াছিল। ব্যষ্টিগত স্বাৰ্থ যখন সাধনার সামগ্ৰী হইয়া উঠে, সমষ্টি তখন উপেক্ষিত হয়,-ক্ষুদ্রের সাধনায় বৃহৎ ভাসিয়া যায়। তখন ভারতের তাহাই ঘটিয়াছিল। সমষ্টিভাবে সাধারণ স্বার্থের প্ৰতি লক্ষ্য করিবার অবসর কাহারও ছিল না ; সে জ্ঞান বা সে প্ৰবৃত্তি তখন ক্লাহারও জন্মে নাই। তাই অপরিণামদৰ্শিতার ফল হাতে হাতে ফলিয়াছিল। সজঘশক্তির অনুম্মেষণে, বিরাট বিশ্ব-স্বার্থের মৰ্ম্মানুধাবনে অসমর্থ হওয়ায় ভারত পরাধীনতার কঠিন শৃঙ্খল স্বেচ্ছায় পরিধান করিল। এই ব্যষ্টিগত স্বার্থ-ক্ষুদ্রের সাধনায় বিরাটের উপেক্ষা-ভায়াতে বৈদেশিকের আগমনপথ প্রশস্ত করিয়া দিয়াছিল। ভারত স্বাধীনতা হারাইয়াছিল।

ধৰ্ম্মহীনতা পায়াধীনতার কারণ । ধৰ্ম্মহীনতাও পল্পাধীনতা-বরণের অন্যতম কারণ বলিয়া নির্দেশ করিতে পারি। অতি প্ৰাচীন কালে, স্মরণাতীত যুগে, হিন্দুধৰ্ম্মের প্রভাব যখন পুর্ণরূপে প্রতিষ্ঠিত, আৰ্য হিন্দুধৰ্ম্মই স্বাধন ভারতের একমাত্র ধৰ্ম্ম-তখন ভারতে পদস্খলনের কোনও নিদর্শন প্রাপ্ত হই লা। সেই স্মরণাতীত কালের কথা ছাড়য়া দিয়া, পরবর্তী অবস্থায় আলোচনায় যখন বৌদ্ধধৰ্ম্মেয়