পাতা:প্রজাপতির নির্বন্ধ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রজাপতির নির্ব্বন্ধ।
২২

অক্ষয় ডেস্ক্ চাপড়াইয়া বাজাইতে লাগিলেন। এক জায়গায় হঠাৎ থামিয়া গম্ভীর হইয়া কহিলেন—হাঁ, হাঁ, আসল কথাটা জিজ্ঞাসা করা হয় নি। এদিক ত সব ঠিক—এখন আপনারা কি হলে রাজি হন?

 দারুকেশ্বর কহিল,—আমাদের বিলেতে পাঠাতে হবে।

 অক্ষয় কহিলেন—সে ত হবেই। তার না কাট্লে কি শ্যাম্পেনের ছিপি খোলে? দেশে আপনার মত লোকের বিদ্যে বুদ্ধি চাপ থাকে, বাঁধন কাট্লেই একেবারে নাকে মুখে চোখে উছ্লে উঠবে।

 দারুকেশ্বর অত্যন্ত খুসি হইয়া অক্ষয়ের হাত চাপিয়া ধরিল, কহিল, দাদা, এইটে তোমাকে করে দিতেই হচ্চে! বুঝলে?

 অক্ষয় কহিলেন, সে কিছুই শক্ত নয়। কিন্তু ব্যাপটাইজ্ আজই ত হবেন?

 দারুকেশ্বর ভবিল ঠাট্টাটা বোঝা যাইতেছেন। হাসিতে হাসিতে জিজ্ঞাসা করিল, সেটা কি রকম?

 অক্ষয় কিঞ্চিৎ বিস্ময়ের ভ’বে কহিলেন—কেন, কথাইত আছে, রেভারেণ্ড্ বিশ্বাস আজ রাত্রেই আসচেন। ব্যাপটিজম্ না হলে ত ক্রিশ্চান্ মতে বিবাহ হতে পারে না!

 মৃত্যুঞ্জয় অত্যন্ত ভীত হইয়া কহিল—ক্রিশ্চান মতে কি মশায়?

 অক্ষয় কহিলেন—আপনি যে আকাশ থেকে পড়লেন। সে হচ্চে না—ব্যাপটাইজ্ যেমন করে হোক্, আজ রাত্রেই সারতে হচ্চে। কিছুতেই ছাড়ব না।

 মৃত্যুঞ্জয় জিজ্ঞাসা করিল—আপনারা ক্রিশান না কি?

 অক্ষয়। মশায়, ন্যাকামি রাখুন! যেন কিছুই জানেন না।

 মৃত্যুঞ্জয় অত্যন্ত ভীত ভাবে কহিল—মশায়, আমরা হিঁদু, ব্রাহ্মণের ছেলে, জাত খোয়াতে পারব না!

 অক্ষয় হঠাৎ অত্যন্ত উদ্ধতস্বরে কহিলেন—জাত কিসের মশায়! এ