চন্দ্র। এ কথা আমি নিশ্চয় বল্তে পারি তাঁর উৎসাহ আমাদের কারো চেয়ে কম নয়।
শ্রীশ ও বিপিনের কাছ হইতে কিছুমাত্র সাড়া না পাইয়া চন্দ্রবাবুও বোধ করি মনে মনে একটু উত্তেজিত হইতেছিলেন।
চন্দ্র। একথা আমি ভালরূপ বিবেচনা করে দেখে স্থির করেছি স্ত্রীলোকের উৎসাহ পুরুষের সমস্ত বৃহৎ কার্য্যের মহৎ অবলম্বন। কি বল পূর্ণবাবু।
পূর্ণবাবুর কোন কথা বলিবার ইচ্ছাই ছিল না—কিন্তু নিস্তেজভাবে বলিল, তা ত বটেই।
চন্দ্রবাবুর পালে কোন দিক হইতে কোন হাওয়া লাগিল না দেখিয়া হঠাৎ সবেগে ঝিঁকা মারিয়া উঠিলেন—নির্ম্মলা যদি কুমারসভার সভ্য হবার জন্য প্রার্থী থাকে তাহলে তাকে আমরা সভ্য না করব কেন?
পূর্ণ ত’একেবারে বজ্রাহতবৎ! বলিয়া উঠিল—বলেন কি চন্দ্রবাবু?
শ্রীশ পূর্ণর মত অত্যুগ্র বিস্ময় প্রকাশ না করিয়া কহিল—আমরা কখনো কল্পনা করিনি যে, কোন স্ত্রীলোক আমাদের সভার সভ্য হতে ইচ্ছা প্রকাশ করবেন, সুতরাং এ সম্বন্ধে আমাদের কোন নিয়ম নেই—
ন্যায়পরায়ণ বিপিন গম্ভীর কণ্ঠে কহিল, নিষেধও নেই।
অসহিষ্ণু শ্রীশ কহিল, স্পষ্ট নিষেধ না থাক্তে পারে কিন্তু আমাদের সভার যে সকল উদ্দেশ্য তা স্ত্রীলোকের দ্বারা সাধিত হবার নয়।
কুমারসভায় স্ত্রীলোক সভ্য লইবার জন্য বিপিনের যে বিশেষ উৎসাহ ছিল তাহা নয়, কিন্তু তাহার মানসপ্রকৃতির মধ্যে একটা স্বাভাবিক সংযম থাকায় কোন শ্রেণীবিশেষের বিরুদ্ধে একদিকঘেঁষে কথা সে সহিতে পারিত না। তাই সে বলিয়া উঠিল—আমাদের সভার উদ্দেশ্য সঙ্কীর্ণ নয়; এবং বৃহৎ উদ্দেশ্য সাধন করতে গেলে বিচিত্র শ্রেণীর ও বিচিত্র শক্তির লোকের বিচিত্র চেষ্টায় প্রবৃত্ত হওয়া চাই। স্বদেশের হিতসাধন একজন স্ত্রীলোক