ভালরূপ আয়ত্ত করিতে পারিতেছিলেন না—অনুতপ্ত শৈল তাড়াতাড়ি তাহা কাটিয়া সহজসাধ্য করিয়া দিল। যে সময়ে যেটি আবশ্যক সেটি আস্তে আস্তে হাতের কাছে জোগাইয়া দিয়া তাঁহার ভোজন ব্যাপারটি নির্ব্বিঘ্ন করিতে লাগিল।
চন্দ্র। শ্রীশ বাবু, স্ত্রী সভ্য নেওয়া সম্বন্ধে আপনি কিছু বিবেচনা করেছেন?
শ্রীশ। ভেবে দেখতে গেলে ওতে আপত্তির কারণ বিশেষ নেই, কেবল সমাজের আপত্তির কথাটা আমি ভাবি।
বিপিনের তর্কপ্রবৃত্তি চড়িয়া উঠিল। কহিল―সমাজকে অনেক সময় শিশুর মত গণ্য করা উচিত। শিশুর সমস্ত আপত্তি মেনে চল্লে শিশুর উন্নতি হয় না, সমাজ সম্বন্ধেও ঠিক সেই কথা খাটে।
আজ শ্রীশ উপস্থিত প্রস্তাবটা সম্বন্ধে অনেকটা নরমভাবে ছিল, নতুবা উত্তাপ হইতে বাষ্প ও বাষ্প হইতে বৃষ্টির মত এই তর্ক হইতে কলহ ও কলহ হইতে পুনর্ব্বার সদ্ভাবের সৃষ্টি হইত।
এমন কি, শ্রীশ কথঞ্চিৎ উৎসাহের সহিত বলিলেন, আমার বোধ হয় আমাদের দেশে যে এত সভাসমিতি আয়োজন অনুষ্ঠান অকালে ব্যর্থ হয় তার প্রধান কারণ, সে সকল কার্য্যে স্ত্রীলোকদের যোগ নেই। রসিক বাবু কি বলেন?
রসিক। অবস্থা গতিকে যদিও স্ত্রীজাতির সঙ্গে আমার বিশেষ সম্বন্ধ নেই, তবু এটুকু জেনেছি স্ত্রীজাতি হয় যোগ দেন নয় বাধা দেন, হয় সৃষ্টি নয় প্রলয়। অতএব ওঁদের দলে টেনে অন্য সুবিধা যদি বা নাও হয় তবু বাধার হাত এড়ান যায়। বিবেচনা করে দেখুন চিরকুমার সভার মধ্যে যদি স্ত্রীজাতিকে আপনারা গ্রহণ করতেন তাহলে গোপনে এই সভাটিকে নষ্ট করবার জন্যে ওঁদের উৎসাহ থাক্ত না-কিন্তু বর্ত্তমান অবস্থায়―