পাতা:বঙ্গবিজেতা.djvu/২০৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙ্গবিজেতা । పిసిసి উপর কোন দেবপুরুষ একখানি ক্ষেপণী হস্তে করিয়া অনন্ত আকাশে সেই মেঘখানি চালনা করিতেছেন। চাহিয়৷ দেখিলেন, মেঘের উপর কোন দেবপুরুষ নাই, কিন্তু নদীর উপর সেইরূপ দেবীকৃতি একজন মনুষ্য একখানি তরী চালন করিতেছে। স্বপ্নে দেখিয়া ছলেন, সেই দেবপুরুষের স্বন্ধে যজ্ঞোপবীত, বিস্মিত হইয়া দেখিলেন, সেই নেীকাচালক নাবিকের স্কন্ধে যজ্ঞোপবীত লম্বিত রহিয়াছে। পাঠক মহাশয়কে বলা বাহুল্য যে, সে পূৰ্ব্বপরিচিত মুঙ্গেরের নাবিক । কমলা বার বার সেই দিকে অবলোকন করিতে লাগিলেন, তাহtয় হৃদয়ে সহস্র চিন্তা জাগরিত হইতে লাগিল ৷ ” এ নাবিক কে ? জাতিতে ব্রাহ্মণ ! ব্যবসায়ে নবিক । তার তামি যে দেবপুরুষকে স্বপ্নে দেখিয়াছিলাম, আকৃতি অবয়ব সেইরূপ ! সেইরূপে দাড় ধরিয়াছে, সেইরূপ গম্ভীরভাবে চিন্ত| করিতেছে! ইনি কি সেই দেবপুরুষ অবন্তীর্ণ হইয়ছেল ?” সহসা চন্দ্রোদয় হইল, সেই নীল আকাশ, সেই অনন্ত বৃক্ষাবলী সেই নদী আলোকে পরিপুর্ণ করিয়া চন্দ্রোদয় হইল । ঠে চন্দ্র লোকে নাবিকের মুখমণ্ডল স্পষ্টরূপে দৃষ্ট হইল । দেখিবামাত্র পুস্থিতি অবারিত সহস্ৰ সাগরতরঙ্গের দ্যায় বেগে কমলার হৃদয়ে প্রবেশ কfরল । কমলা ক্ষণেক উন্মত্তার ন্যায় কম্পিত কলেবরে সেই মুখমণ্ডলের দিকে নিরীক্ষণ করিয়া পরে চীৎকার শব্দে “ উপেন্দ্রনাথ” এইমাত্র উচ্চারণ করিয়া মুচ্ছিত হইয়া জলে নিপতিত হইলেন ! নাবিকও অনেকক্ষণ অবধি সেই রমণীর দিকে দৃষ্টি করিতেছিলেন, নবেদিত চন্দ্রলোকে সহসা সেই রমণীর মুখমণ্ডল দেখিতে পাইয়াছিলেন। দেখিবামাত্র তাহীর হৃদয়ে যেন বজ্ৰঘাত হইল! রমণী জলে পড়িবামাত্র তিনিও ঝাপ দিয়া জলে পড়িলেন । “ হৃদয়ের কমলা, তোমাকে কি আবার পাইলাম, ন। স্বপ্ন দেখিতেছি ” এই বলিয়া সেই চৈতন্যখুন্য শরীর নদীতীরে তুলিলেন । - সেই চক্রালোকে, সেই জনশূনা নদী-তীরে, সেই নিবিড় বৃক্ষশ্রেণীর পার্শ্বে, নাবিক যত্নসহকারে কমলার চৈতন্য সম্পাদনের চেষ্টা করিতে লাগিলেন । অনিমেষ লোচনে সেই মনোহর বদনম গুলের দিকে নিরীক্ষণ করিতে লাগিলেন। সেই সুন্দর ললাট, সেই নিবিড় কৃষ্ণ ক্রযুগল, সেই স্নেহপরিপূর্ণ চিন্তাপ্রকাশক নয়ন, সেই মধুর ওষ্ঠ, ও সেই নিবিড় কৃষ্ণ কেশরাশি, সেই উন্নত হৃদয় ও সুসৌষ্ঠব বাহুযুগল তাবরণ করিতেছে।